গত বছরের শেষের দিকে চিলিতে সাধারন নির্বাচনের ফলাফলের পরে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের আর কোনও সংশয়ই ছিল না যে গোটা লাতিন আমেরিকা জুড়েই পিঙ্ক ওয়েভ (গোলাপি স্রোত) আবার ফিরে এসেছে । কারন গত এক বছরের মধ্যেই প্রথমে পেরু , তারপর হন্ডুরাস , এবং বলিভিয়ার নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে বাম এবং বামঘেঁষা সরকার তৈরি হয়েছে। এই তালিকায় আগে থেকেই রয়েছে ভেনেজুয়েলা , নিকারাগুয়া এবং অবশ্যই কিউবা । আর্জেন্টিনা ও মেক্সিকোতেও রয়েছে প্রগতিশীল সরকার ।

নয়া উদার অর্থনীতির আঁতুড়ঘর চিলিতে বামপন্থীদের জয়ের তাৎপর্য অপরিসীম। গার্ডিয়ানের মতো কাগজও লিখেছিল দীর্ঘ ৫০ বছর পরে চিলির মানুষের ‘মুক্তি’। আসলে চিলিতে পরাজিত হয়েছে নব্য নাৎসিবাদ,পরাজিত হয়েছে দীর্ঘ দশকের পর দশক ধরে চলে আসা উগ্র দক্ষিনপন্থা । বিপুল জয়ের পরে চিলির নতুন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি গ্যাব্রিয়েল বেরিক তাঁর সমালোচকদের কাছে ‘কমিউনিস্ট’ উপাধি পেয়েছেন । ডিয়েগো পোট্রালেস বিশ্ববিদ্যায়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক রদ্রিগো স্পিনোজা লিখেছিলেন – বোরিক প্রথাগত বামপন্থীদের তুলনায় আরও ‘বেশি বাম’। কারন ধনীদের ওপর কর চাপানোর কথা ছিল তার নির্বাচনী ইস্তেহারে , ছিল সর্বস্তরে শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি বৃদ্ধির কথা , সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা চালু, পেনশনব্যবস্থা ঢেলে সাজানো ।  নবউদার অর্থনীতি এমনিতেই ধুঁকছিল , করোনা মহামারী এসে গোটা বিশ্বে সেটাকে আরও বেআবরু করে দিয়েছে । চিলি কিন্তু নয়া উদারবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিল এই মহামারী আসার আগেই । ব্যপক বিক্ষোভে গোটা দেশ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ২০১৯ সালে । বিক্ষোভের কারন জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান খরচ অনুপাতে আয় হ্রাস , অপর্যাপ্ত সরকারী সুবিধা , ব্যয়বহুল স্বাস্থ্যব্যবস্থা, খেটে খাওয়া মানুষ ও ছাত্রদের ওপর ঋণের বোঝা । রাষ্ট্রসংঘের তথ্য অনুসারে, চিলির সবচেয়ে ওপরের দিককার ১ শতাংশ মানুষ দেশটির ২৫ শতাংশের বেশি সম্পদের মালিক। আবার অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) তথ্য অনুসারে, উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে পরিবার পিছু আয়ের দিক থেকে চিলি দ্বিতীয় বৈষম্যপূর্ণ দেশ। এছাড়াও চিলির জাতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ীই, প্রতি দশ পরিবারের মধ্যে ছয় পরিবারেরই মাসিক আয় থেকে সারা মাসের ব্যয় মেটে না। তাই ২০১৯ সালে দেশটিতে যে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল, তার প্রধান কারণই ছিল ধনী ও গরিবের মধ্যে এই সমুদ্রসম ব্যবধান। প্রাক্তন ছাত্রনেতা বেরিক সেই সময় রাজপথে ছিলেন, এখন জিতেছেন চিলির রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে । নির্বাচনে বেরিকের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কট্টর ডানপন্থী রক্ষণশীল নেতা জোসে অ্যান্তোনিও কাস্ত , যার বাবা মাইকেল কাস্ত ছিলেন হিটলারের নাৎসী বাহিনীর লেফটেন্যান্ট। কাস্ত ছিলেন চিলির নতুন সংবিধান লেখার জন্য গণভোটের বিরুদ্ধে। খোলাখুলিভাবেই বলেছেন তিনি চিলির প্রাক্তন একনায়ক পিনোচেতের স্বৈরতন্ত্রকে সম্মান করেন ।  ভোটের মাত্র তিন সপ্তাহ আগে বৈঠক সেরে এসেছিলেন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ মার্কিন রিপাবলিকান সেনেটর মার্কো রুবিও’র সঙ্গে । বিপুল অর্থ ও পরামর্শ পেয়েছেন মার্কিন বৃহৎ পুঁজিপতিদের থেকে । এতো কিছুর পরেও হেরেছেন প্রায় ১২ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে । ব্যবধান এতোটাই বেশি হয়েছে যে নির্বাচন পরবর্তী কোন গণ্ডগোল করার বা অভিযোগ করারও সুযোগ পাননি কাস্ত । 

ছাত্র আন্দোলন থেকে পরিনত হওয়া মধ্য ত্রিশের ঝকঝকে তরুন বেরিক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ের পরে বলেছেন – ‘চিলি যদি নয়া উদারবাদের জন্মস্থান হয়ে থাকে, এবার তা হবে নয়া উদারবাদের কবরস্থান’। দৈনন্দিন জীবন সংঘর্ষে ক্লান্ত চিলির মানুষ আশা করছেন নতুন রাষ্ট্রপতি তাদের জীবনযাত্রার মান ফেরাবেন । তবে এটাও ঠিক যে দেশকে নয়া উদারবাদের খাদ থেকে টেনে তুলতে বেরিককে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে । আইনসভায় বাম ও ডানপন্থীদের সংখ্যা সমান। বোরিক নিজের ‘অ্যাপ্রুভ ডিগনিটি’ জোটের বাইরেও বড় জোট গড়ার চেষ্টা করছেন। কেননা, আইনসভার সম্মতি ছাড়া তাঁর সরকারের পক্ষে কোনো কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। ফলে বোরিককে তাঁর কর্মসূচি পাস করাতে হলে নিজের জোটের বাইরেও মধ্যপন্থীদের প্রতিটি ভোট প্রয়োজন। বেরিক নিজে বলেছেন – সবুজ উন্নয়নের দিকে দেশকে নিয়ে যেতে সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা ৪৫ থেকে কমিয়ে ৪০ ঘণ্টা করবেন। ৫ লাখ নারীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন। সামাজিক বৈষম্য কমাতে যে সংস্কার কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন, সেটা হতে হবে দীর্ঘমেয়াদি। ধাপে ধাপে সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে। বেরিকের কথায় , চিলির সমাজব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনার সময় হয়েছে। নতুন প্রজন্ম চায় তাদের সবার অধিকারকে সম্মান জানানো হোক। তাদের যেন ভোগ্যপণ্য কিংবা ব্যবসায়িক হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা না করা হয়। ২৩ জনের নতুন মন্ত্রীসভায় ১২ জন মহিলা সহ কমিউনিস্ট পার্টির সভ্য রয়েছেন ৩ জন । 

চিলিতে বামপন্থীদের জয়ের মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই কলম্বিয়াতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিতলেন বাম প্রার্থী গুস্তাভো পেত্রো । কলম্বিয়ার দুশো বছরের ইতিহাসে এই প্রথম নির্বাচিত বাম রাষ্ট্রপতি । বামপন্থী নির্বাচনী জোট প্যাক্টো হিস্টোরিকা (হিস্টোরিকাল প্যাক্ট)-র প্রার্থী গুস্তাভো পেত্রো পেয়েছেন ৫০.৪ শতাংশ। বিপরীতে, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণপন্থী হার্নান্ডেজের পক্ষে সমর্থনের হার ৪৭.৩ শতাংশ। কলম্বিয়া মানে লাতিন আমেরিকায় দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের শক্ত ঘাঁটি। লাতিন আমেরিকায় ওয়াশিংটনের হস্তক্ষেপের জন্য সবচেয়ে বিশ্বস্ত হলো কলম্বিয়ার সেনাবাহিনী। এর স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব অপরিসীম। এক কলম্বিয়াতে রয়েছে সাত-সাতটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। এর সঙ্গেই পেন্টাগন নিয়মিত অর্থ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সাহায্য করে কলম্বিয়ার সেনাবাহিনীকে। প্রতিবেশী দেশ ভেনেজুয়েলায় সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য নির্ভর করে কলম্বিয়ার সেনাবাহিনীর ওপর। ২০১৯, ভেনেজুয়েলার নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করতে মার্কিন পদক্ষেপে সক্রিয়ভাবে যোগ দেয় কলম্বিয়ার সেনাবাহিনী। সামরিক খাতে বরাদ্দের পরিমাণ জিডিপি’র ১২ শতাংশ। রয়েছে ২ লক্ষ ৯৫ হাজারের শক্তিশালী সেনাবাহিনী। লাতিন আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম। সরাসরি এতো রকম মার্কিন হস্তক্ষেপের পরেও সেই দেশের সাধারন মানুষের রায়ে হার মানতে হল মার্কিন ইশারায় চলা চরম দুর্নীতিগ্রস্ত রক্ষণশীল রাষ্ট্রপতি ইভান দুকেকে । প্রাক্তন বাম গেরিলা নেতা গুস্তাভো পেত্রোকে দুহাত তুলে ভোট দিয়েছেন গরীব আদিবাসী আফ্রো কলম্বিয়ান মানুষ ।

কলম্বিয়ার পরে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ দেশ ব্রাজিলের নির্বাচন অক্টোবরে । যার ফলাফল এখন থেকেই সংবাদমাধ্যম বলে দিচ্ছে যে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে জিততে চলেছেন শ্রমিক নেতা তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি লুলা । ব্রাজিলের ক্ষেত্রে নয়া উদারবাদের ভয়াবহ দিকটি বিষয়টি চিলির চেয়েও অনেক বেশি । ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচিত হওয়ার পর বলসোনারোর জনপ্রিয়তা এখন একেবারেই কমেছে। তাঁকে নিয়ে ক্ষোভের মাত্রা মারাত্মক বেড়েছে করোনা মহামারির সময়। ব্রাজিলের অধিকাংশ জনগনই মনে করেন, করোনা মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলসোনারো সরকার। মহামারি শুরুর পর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখের বেশি মানুষের, যা পৃথিবীতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ । স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিশেসজ্ঞদের কোনরকম পরামর্শে কর্ণপাত না করে নিজের মতো চলেছেন বলসেনারো। গোটা বিশ্ব দেখেছে ট্রাম্পের সাথেই পাল্লা দিয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলসেনারো কিভাবে ব্রাজিলের মতো প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর একটা দেশের সবকিছু কর্পোরেটের হাতে তুলে দিয়েছেন । কিভাবে দেশের বিরোধীদের তথা বামপন্থীদের ওপর অত্যাচার নামিয়ে এনেছেন , ধ্বংস করেছেন গনতন্ত্রকে। প্রতিবাদস্বরুপ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমিক ধর্মঘটের সাক্ষী থেকেছে ব্রজিল । গত অক্টোবরেই বলসোনারোকে অপসারণের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। একযোগে দেশটির ১৬০টির বেশি শহরে এই বিক্ষোভ আন্দোলন সংগঠিত হয় । শুধু বিক্ষোভই না, বলসোনারোকে ইমপিচমেন্টের দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে শতাধিক আবেদন করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে একাধিক ইস্যুতে তদন্তের অনুমোদনও দিয়েছেন ব্রাজিলের সর্বোচ্চ আদালত। তবে নিজের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই মানতে নারাজ বলসোনারো। এর মধ্যেই ব্রাজিল সরকারের জনপ্রিয়তা নিয়ে একটি জনমত সমীক্ষা করেছে অ্যাটলাস ইনস্টিটিউট। সেখানে দেখা গেছে, এই মুহূর্তে ব্রাজিলের ৬১ শতাংশ বাসিন্দা মনে করেন, দেশ পরিচালনায় বলসোনারো সরকারের কর্মকাণ্ড একেবারেই সন্তোষজনক নয়। এর আগে ২০১৯ সালে ক্ষমতায় বসার সময় বলসোনারোর বিপক্ষে ছিলেন মাত্র ২৩ শতাংশ মানুষ। ইতিমধ্যেই গত ৭ ই মে সাও পাওলোর সমাবেশ থেকে লুলা সরকারিভাবেই নিজের প্রার্থীপদ ঘোষণা করেছেন । দ্ব্যারথহীন ভাষায় জানিয়েছেন – ‘ব্রাজিলের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করা জরুরী।  আমি এখনও লড়াই করার জন্য যথেষ্ট তরুণ আছি। রাজনীতি আমার শরীরের রক্তে মিশে গেছে। আর নতুন করে রাজনৈতিক লড়াই শুরুর একটি কারণ আছে। ১২ বছর আগে রাষ্ট্রপতির অফিস ছাড়ার পর এখন দেখছি যে, গরীবদের স্বার্থে আমি যে সমস্ত নীতি তৈরি করেছিলাম তা ধ্বংস হয়ে গেছে। স্বৈরাচারী ও বর্ণবিদ্বেষী শাসকের হাত থেকে ব্রাজিলকে উদ্ধার করা জরুরী’ । লুলা তাঁর বক্তব্যে জোর দিয়েছেন আফ্রিকার সাথে ব্রাজিলের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের ব্যাপারেও । লুলার মতে আফ্রিকার কাছে ব্রাজিল ঋণী । এই ঋণ টাকা পয়সার নয় । এই ঋণ সংহতির । কালো মানুষদের ওপর ৩৫০ বছরের অত্যাচারের ইতিহাসের ঋণ । আফ্রিকার ইতিহাস , কালো মানুষদের সংগ্রামের ইতিহাস প্রতিটা স্কুলের সিলেবাসে থাকবে যাতে বাচ্চারা ভবিষ্যতে কখনও কোন আফ্রিকান বা কালো মানুষকে ছোট মনে না করে । আসলে এইসব প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার বিপরীত পথে হেঁটেছেন ট্রাম্পের বন্ধু বলসোনারো , ফলে আজ ব্রাজিলের সমাজে বেড়েছে ঘৃণা , হিংসা ও কুসংস্কার । যার সাথে অনেকে মিল পাবেন আজকের ভারতের । বামপন্থী লুলার লড়াই তাই এই ফ্যাসিস্ত অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধেও । লুলার নিজের মতে এই নির্বাচনে জয়ের চেয়েও বেশি ব্রাজিলের পুনরুদ্ধার প্রয়োজন ।         

অর্থনীতির বিকাশের ক্ষেত্রে লুলা চাইছেন লাতিন আমেরিকার এক এবং অভিন্ন একটি ডিজিটাল মুদ্রা , যেটা গোটা মহাদেশের ব্যবসা বানিজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং বলা বাহুল্য লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ব্রাজিল স্বাভাবিকভাবেই তাতে নেতৃত্ব দেবে । এই অভিন্ন মুদ্রার ফলে গোটা লাতিন আমেরিকার মহাদেশের সব দেশগুলোর মধ্যে একতাও বাড়বে ।

আজকের ব্রাজিলের পরিস্থিতি বদলাতে লুলা নিজে আশাবাদী , বলছেন – যেটা হয়ে গেছে সেটা অতীত , ফের একবার নতুন ব্রাজিল তৈরি করতে তিনি প্রস্তুত । ব্রাজিলে আজ একুশের যুবক-যুবতী থেকে থেকে সত্তরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মনেও আকিওলির বিখ্যাত মেলোডিটা উঁকি দিচ্ছে – ‘ লুলা লা – একটা তারা ঝলমল করছে । লুলা লা – একগুচ্ছ আশার আলো দেখা যাচ্ছে’ ।