“মৃত্যুকে তুমি উপহাস করেকরেছো জয়রক্তস্নানের মধ্যে হয়েছে অরুণোদয়,প্রাণ সমুদ্রে এনেছো বন্যা কি দুর্জয়”। সেদিন বাংলার ছাত্র-যুব  সমাজ দুর্জয় সাহসের পরিচয় দিয়েছিলেন। গোঁড়া ইংরেজরা সেদিন দেখেছিল বাঙালির বাচ্চার রক্তের তেজ। ১৯৪৫-র ২১শে নভেম্বর আজাদহিন্দ ফৌজের সৈনিকদের মুক্তির দাবীতে কলকাতার বুকে সংগঠিত মিছিলের উপর গুলি চালায় ব্রিটিশের পুলিশ। প্রান হারায় ছাত্র কমরেড রামেশ্বর বন্দোপাধ্যায় এবং শ্রমিক আব্দুল সামাদ। 

    পরেরদিন কলকাতা শহর উদ্বেল হয়ে ছাত্র যুব মজুরদের মিছিলে।ওইদিন (২২শে নভেম্বর ১৯৪৫)প্রতিবাদী হাজার হাজার মানুষের মিছিল পুলিশের বাধা ভেঙ্গে এগিয়ে চলে ডালহৌসি স্কোয়ারের দিকে ।পুলিশের বাধা অতিক্রম করে বিক্ষোভকারীরা প্যারেড করে ওই ডালহৌসি চত্বরেই।সেদিন ও আবার চলেছিল গুলি মারা গেছিলেন আর ও অনেককে কিন্ত দখল ছাড়নি রাস্তার। প্রতিবাদী ছাত্র যুব মজুরদের প্রতিরোধে পিছু হটেছিল সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশের পোষা বাহিনী।                   শহীদ রামেশ্বরের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে এস এফ আই -ডি ওয়াই এফ আই।ডালহৌসি থেকে কিছুটা দূরে ধর্মতলার ‘ইনসাফ’ সভায় এ যুগের রামেশ্বররা সৃষ্টি করলেন এক নতুন ইতিহাস।    

মীনাক্ষী, ধ্রুব, সৃজন, প্রতিকুররা লিখলেন লড়াইয়ের এক নতুন বীরগাথা।শাসক তৃণমূল এগারো বছর ধরে ভিক্টোরিয়া হাইসের সামনে শুধুমাত্র তাদের ‘পাগলু ড্যান্স’ সভা ছাড়া আর যে কোনও দলের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে।ব্রিটিশের দালালি করা আর এস এসের হাত ধরে যে মমতার উত্থান  সেই মমতা শাসক হয়ে নিজেকে এ যুগের রানী মনে করছে।যে রানী মনে করে ধর্মতলা তার নিজের সম্পত্তি সেখানে অন্য রাজনৈতিক দলের প্রবেশাধিকার নেই।    কিন্ত কীভাবে এই অহংকারী শাসকের অহং ভাঙ্গা যায় তা ভালোভাবেই জানে বাম ছাত্র-যুবরা।ওয়াই চ্যানেলে মঞ্চ বাঁধার সময় জমায়েত প্রসঙ্গে আনন্দবাজারের সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে মীনাক্ষী জানান  ‘‘পুলিশের অনুমতি দেওয়ার এক্তিয়ারই নেই। তবে কমরেডরা আসবেন। জায়গা না হলে মানুষ নিজের জায়গা করে নেবেন।১২টা বাজতে দিন তার পর দেখবেন।’’       তারপর কী দেখলো আজ শহর কলকাতা এবং গোটা রাজ্যে।যে মিডিয়া কার্যত বামেদের সভা সমাবেশ ব্রাত্য করে রাখে আজ তারা দেখালো লাল ঝড় লাল সুনামি র কথা।শাসক ভেবেছিল ওয়াই চ্যানেলে ই আটকে রাখবে ছাত্র-যুবদের কিন্ত কৌশল নিয়ে রানীর পুলিশকে সেপ্টেম্বরে এপ্রিল ফুল করলেন কমরেডরা।   

একদল দলদাস পুলিশ কে সি দাসের সামনে ব্যারিকেড করছিলেন প্রথমেই বাধা দেন সমাবেশে আসা কর্মীরা।বাধা পেয়ে হম্বিতম্বি যেই শুরু করেছে তখন তার হাতে থাকা ওয়াকিটকি তে খবর আসে উওর চব্বিশ পরগনা আর কলকাতা জেলার মিছিলে হাজার হাজার ছাত্র যুবরা আসছে ।বীরপুঙ্গবরা দেওয়াল লিখন বুঝতে পেরে পিঠটান দেয়।    সুশৃঙ্খল ছাত্র যুবর জমায়েত দখল নেয় ধর্মতলার মোড়ের সভা হয় সেখানেই যেখানে করা যাবে না ঘোষনা করেছিল তৃণমূল সরকার।         কপাল লক্ষ্য করে গুলি করবার নিদান দেওয়া যুবরাজের পুলিশ আজ ছাত্র যুব কমরেডদের প্রতিরোধী জমায়েতের গনগনে আগুনে মেজাজের টের পেয়েছিল। এই ছাত্র যুবরা এসেছিল তাদের শহীদ সাথীদের রক্তের হিসেব চাইতে ।শহীদের রক্তের হিসেব চাওয়া জমায়েতের  মেজাজতো এমন আগুনেই হবে।   

 এই ইনসাফ সভার বার্তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়বে এই বাংলার প্রতিটি গ্রাম থেকে শহরে।মানুষ বুঝতে পারছে তাদের ভয় ভাঙ্গতে শুরু করেছে এখন শুধু প্রয়োজন এই ইনসাফ সভার মতো মানুষ কে নেতৃত্ব দিয়ে শাসক তৃণমূলের চুরি জোচ্চুরির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আর শহীদ কমরেডদের রক্তের হিসেব বুঝতে প্রতিরোধের।