এখনো সময় পেরোয়নি, এখনো ঝাঁঝালো গন্ধটা ওদের নাসারন্ধ্র থেকে মাথায় ঘুরছে। আজকের দিন আর আগামীকাল, সবটুকু দিয়েও ভুলতে পারবেনা, এমন প্রত্যাঘাত পেতে অভ্যস্ত ছিলোনা তো! একজন সারা পৃথিবীতে জয়ডঙ্কা বাজিয়ে শেষ পর্যন্ত আপ্রাণ চেষ্টা করেও রক্তপতাকা হাপিশ করে দিতে না পেরে  রাগে, ক্ষোভে, ভয়ে, আতঙ্কে বাঙ্কারে নিজেকে খতম করে দিয়েছিলো! অনেক বছর আগেকার ঘটনা হলেও ওদের বংশধর এখনো ঘুরছে তো, ফাটল থেকে মাথা বের করে ওরা, আর এদেশে তো দুধেভাতে থাকার চেষ্টা করে চলেছে! আবার আজকের দিনেই অসমসাহসী যোদ্ধারা, অনামা অজানা ভিয়েতকং মার্কিন গোলিয়াথদের দম্ভ দুমড়েমুচড়ে মেকংয়ের জলে ভাসিয়ে দিয়েছিলো। তাই, এই দিনটা ওদের পক্ষে ভোলা অসম্ভব! মুখে নাপামের ঘ্রাণ ভালোবাসার কথা বললেও ফিল্মের লেফটেন্যান্ট কর্নেল কিলগোরও তা পারেনি, বাস্তবের দৈত্যরাও পারেনা।

আজকের দিন পেরোতে পেরোতেই আসছে আবারও আরেকটা দিন। এই দিনটা সেইসব লোকেদের, যারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাটছে, কিন্তু মূল্য? কিস্যু না!! সে জারশাসিত সোভিয়েত হোক, আর ডলার ডিপ্লোম্যাসি সাজানো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র! হীরক রাজা সব দেশেই থাকে, আর তাদের মগজধোলাই ঘরও আছে। গফুর চটকলকর্মী হোক, বা সামারফিল্ডের উপন্যাসের লন্ডনের শ্রমিক ধর্মঘট, কিছুই এই দিনটাকে এড়িয়ে যেতে পারেনা। পাতার কালো অক্ষর আজ চূড়ান্ত বাস্তবতার সম্মুখীন, যেখানে ওয়াল স্ট্রিট, বা আমাজন, লালঝাণ্ডা বিদ্যমান সর্বত্র, কারণ শ্রমিকের অধিকার, আন্তর্জাতিক শ্রম আইনের রক্ষায় অন্যকেউ এগিয়ে আসবেনা, বুটের তলায় পিষে ফেললেও না, বেয়নেটের ফলা বুক ফালাফালা করে দিলেও না! শ্রমিক দিবস শুধুমাত্র প্রতিটি খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার গলা তুলে আদায় করার দিন নয়, আগামীর বার্তাবাহক সেই শিশুদের বুকভরা নিঃশ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার সুনিশ্চয় করার অঙ্গীকার। ডেভিডরা হারেনা, আর এটা খুবই সত্যি যে,

“পৃথিবীর ইতিহাসে কবে কোন অধিকার বিনা সংগ্রামে শুধু চেয়ে পাওয়া যায়?

কখনোই নয়। কোনদিনও নয়।

অধিকার কেড়ে নিতে হয়, লড়ে নিতে হয়।” অতএব, লড়াই চলছে, চলবে।