মুনাফা সন্ধানী ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক ক্ষমতাধরদের অনুদান দেন। প্রায় সমগ্র বিশ্বে, চিরকাল এই প্রথা চালু। সিরাজদৌল্লা দিল্লীর বাদশাহের থেকে সনদ আদায়ের জন্য জগৎশেঠের কাছে বিপুল দৌলত দাবী করেন। জগৎশেঠ অস্বীকার করায় ভরা সভায় লাঞ্ছিত হতে হয়। সিরাজ পাল্টা জবাব পেয়েছেন পলাশীর প্রান্তরে। রাজনৈতিক ক্ষমতাধররা সতর্ক, বিতর্কে জড়ান না। বিক্ষিপ্ত ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পদের বণিকের মানদন্ড গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজদন্ড হয়ে যায়। যিনি প্রণামী দেন, বিনিময়ে আশীর্বাদ ভিক্ষা করেন। প্রণামী বিনিয়োগ, আশীর্বাদ মুনাফা। অনুগ্রহে খুশী হলে পরবর্তী পর্যায়ে প্রণামীও বাড়ে। আবার শিল্পপতিরা বিভিন্ন কোম্পানির লটারির টিকিটও কাটেন। কোন একটা লেগে যাবে। হনুমান সাজতে হলে সাজবেন, পরের যাত্রাপালায় শাহজাহানের তাজমহল। বিধায়ক বিক্রী হন, তেমনই শিল্পপতিরা সাংসদ, বিধায়ক পোষেন। শিল্পপতিরা সাংসদের পাসওয়ার্ডে বিদেশে বসে ফাইল আপলোড করতে পারেন। পিচ্ছিল দেশসেবকরা জনগনের কাছে বিপজ্জনক হলেও শিল্পপতির পাপোষের ঘরোয়া লক্ষ্মী।

শিল্পপতিরা প্রকাশ্যে বা গোপনে কালো টাকায় অনুদান দিচ্ছেন, ভাল কথা। কিন্তু বিনিময়ে যখন সেই বিনিয়োগকারী ঝোল টানতে যান, তখন সমালোচনার ঝড় ওঠে। শিল্পপতিও বলতে পারেন না, পয়সা দিয়ে তিনি এই দুর্নীতি ক্রয় করেছেন কিংবা মন্ত্রীও সাফাই দেন না, নির্বাচনে মহান ব্যক্তিটি বিনিয়োগ না করলে চেয়ারে তিনি বসতে পারতেন না। তার একটা ভাড়া আছে। চেয়ারের কাঠ কাটে ঘুণ পোকা, আর চেয়ার কাটে ঘুষ পোকা। ফলে একটা আড়াল আবডাল হলে ভাল হয়। এই ঘোমটার নাম দেওয়া হল স্বচ্ছতা। টাটা, বিড়লা, গোয়েঙ্কাদের কংগ্রেসী যুগে আচ্ছাদনের পরোয়া ছিল না। দক্ষিণপন্হী দল মানে শিল্পপতিদের থেকে সেলামী আদায় করবে, এবং শিল্পপতিরা সর্বসমক্ষে ক্ষমতাশীল সরকারের সেবা পাবে। কেবল স্বচ্ছতা বললেই হবে না, দায়বদ্ধতাও থাকবে, তবে আড়ালে। পেছনে সমালোচনা করুন, দুজন গুজরাতি দেশ বিক্রী করছেন, দুজন গুজরাতি কিনছেন, কিন্তু উভয়ের স্বচ্ছ দায়বদ্ধতায় প্রমাণের সুযোগ থাকবে না। পশ্চিমা বানিয়া গোষ্ঠী সংসদে পূর্ণ বহুমতের সুযোগে তাস খেলে দিলেন।

২০১৭ সালে পূর্ণাঙ্গ বাজেটে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এই দান-প্রতিদানকে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্হায় আনতে Electoral Bond বা নির্বাচনী বন্ডের তত্ত্ব লোকসভায় পেশ করেন। চালু হয় ২রা জানুয়ারী, ২০১৮। নির্বাচনের পূর্বে আশীর্বাদক ও পরে আশীর্বাদপ্রার্থীরা স্টেট ব্যাঙ্কের কাউন্টারে যাবেন, ব্যাঙ্কিং রীতি মেনে নির্বাচনী বন্ড কিনবেন। ব্যাঙ্ক ক্রেতাকে একটি রসিদ ধরিয়ে দেবে। রসিদে ক্রেতার নাম থাকবে না। অনেকটা বিয়ারার চেকের মত। সেই মসীহা রাজনৈতিক দলের দপ্তরে গিয়ে ব্যাঙ্কের রসিদ উপহার দিয়ে প্রয়োজন মত আতিথ্য সেবা উপভোগ করে নিঃশব্দে লুকিয়ে যাবেন। রাজনৈতিক দল এবার উপস্হিত হবে স্টেট ব্যাঙ্কের কাউন্টারে। তুলে ধরবেন খাজানার বন্ডটি। বন্ডের উল্লিখিত টাকা রাজনৈতিক দলের অ্যাকাউন্টে ক্রেডিট হয়ে যাবে। ব্যাঙ্কিং নিয়ম মোতাবেন digital paper trail অটুট রইল। কিন্তু জনগনের দৃষ্টির অগোচরে রয়ে গেল। এবার কোন শিল্পপতি কেন আশীর্বাদ পাচ্ছেন, তাই নিয়ে বাজার গরম করা ছাড়া কোন হাতিয়ার রইল না। দক্ষিণপন্হী দলগুলি ঊর্ধবাহু হয়ে নৃত্য করেছে।

বামপন্হীদের খদ্দের গরীব গুর্বো জনতা। খুব স্বাভাবিক ভাবে বামপন্হী দলগুলি চৌর্যবৃত্তির বিরোধিতা করবে। কোন দল নির্বাচনী বন্ড থেকে কত আমদানী করল, তা কেবল দলীয় প্রকাশিত ব্যালেন্স শিট থেকেই জানা যেতে পারে। তিনটি সর্বভারতীয় দক্ষিণপন্হী দলের হিসাব দেখে চক্ষু চড়ক গাছ। জনতা পার্টি ৬৫৬৪ কোটি, সর্বভারতীয় তৃণমূল ১০৯৬ কোটি এবং অল ইন্ডিয়া ন্যাশনাল কংগ্রেস ১১৩৫ কোটি টাকা। এত লুঠেরা ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগদান করলেন, তাঁরা নিশ্চই প্রণামী বাক্স ভরিয়ে গেছেন। ফলে বিজেপির মোটা পেটের কারণ আছে, কিন্তু সারা ভারতে সংগঠন থাকা জাতীয় কংগ্রেস কী করে আঞ্চলিক তৃণমূলের থেকে দৌড়ে পিছিয়ে গেল? একা শঙ্কর আঢ্য যদি ২০,০০০ কোটি টাকা বিদেশে চালান করে থাকেন, তাহলে দলগুলির ঘোষিত সংখ্যাগুলি বুজরুকি মনে হয়। এই ৩টি দল যে হিসাব দাখিল করেছে, তাতে ৫৫% বিজেপি, ৯.৫% কংগ্রেস এবং তৃণমূল ৯.২%। বাকি সব দল মিলে ২৬.৩%। স্বচ্ছ এবং দায়বদ্ধ কৌশল আদপেই ভারতীয় সংবিধান মোতাবেক হয়েছে, নাকি জালিয়াতি?

১৫ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি মাননীয় ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বি.আর গাভাই, বিচারপতি জে.বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ এই ঘোমটাকে অসংবিধানিক ঘোষণা করে ঐতিহাসিক রায় দিলেন। আগামী ৬ই মার্চের মধ্যে স্টেট ব্যাঙ্ক দাতা, গ্রহীতা, তারিখ, বন্ড মূল্য সহ যাবতীয় হিসাব দাখিল করবে নির্বাচন কমিশনের সামনে। ১৩ই মার্চ নির্বাচন কমিশন আদালতে পেশ করবে। নির্বাচনের প্রাক্কালে ধার্মিক নরেন্দ্র দামোদর মোদী সরকারকে অর্ডিনান্স বা অধ্যাদেশ জারি করে শীর্ষ আদালতের রায়ের প্রয়োগ রোধ করতে হবে। এই বন্ড ১৯(১)(ক) ধারা নাগরিকের বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং তথ্য জানার অধিকার বিরোধী। এর কোন অধিকারের জন্যই মোদী সরকার আগ্রহী নয়। কালো টাকা রোধ করার নামে কালো টাকা নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে ব্যবহৃত হচ্ছে। যাঁরা দাতা, তাঁরা কি সেই দলের নীতিকে সমর্থন করছেন, নাকি কিছু প্রাপ্তির প্রত্যাশা করছেন। এর কোন প্রশ্নের জবাব শিল্পগোষ্ঠী ও দলগুলি দিতে পারবে না।

২০১৭ সালের বাজেট পাশের সময় ভারতীয় জনতা পার্টির সরকারের অজুহাতগুলো যে দুজন ব্যক্তি প্রত্যাখ্যাত করেছিলেন, তাঁদের একজন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত প্যাটেল ও নির্বাচন কমিশনার

ও.পি রাওয়াত। কোন ব্যাঙ্কের উপর নির্ভর না করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে দায়িত্ব দেবার পক্ষপাতি ছিলেন, কারণ বন্ড মুদ্রার মতই একটি ইনস্ট্রুমেন্ট। কাগুজে বন্ডের বদলে ডিজিটাল বন্ড কার্যকারী হতে পারত। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী কর্ণপাত করেনি। কোন শিল্পগোষ্ঠী কত অনুদান দিচ্ছে, তা আগামী সরকারকে প্রভাবিত করতে পারে। ফলে নির্বাচনী ইস্তেহারের মত ভোটারদের জানার অধিকার আছে। সাধারণ ভোটারের মত আবেগ কেন্দ্রীক নয়, এই অনুদান স্বার্থ সংক্রান্ত। ফলে সরকারের থেকে সবার সমান অধিকারের ১৪তম অনুচ্ছেদ বিরোধী। বন্ড লেনদেনের ৯৮% এসেছে কোটি টাকার বন্ড থেকে, ফলে সরাকারের উপর কর্পোরেট অফিসগুলোর প্রভাব ও আধিপত্য কেবল অভিযোগ নয়, চরম বাস্তব। স্টেট ব্যাঙ্ক ১৬,৫১৮ কোটি টাকার বন্ড বিক্রি করেছে। কেন্দ্র কিংবা বাংলার শাসকরা তুমুল সুবিধা পেয়েছে।

কর্পোরেট সংস্হা যাতে অনিয়ন্ত্রিত চাঁদা দিতে পারে সেই লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ও কোম্পানি আইনের পরিবর্তনও সাধিত হয়েছে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কালো টাকা রুখতে খিড়কির দরজা খুলে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিজেপি ও কংগ্রেসের ক্ষেত্রে যেমন দাতাদের নাম প্রকাশ্যে আসবে তেমনই তৃণমূলের মোট আয়ের ৯৮% এসেছে নির্বাচনী বন্ড থেকে। কোন কর্পোরেট সংস্হা এত টাকা মা-মাটি-মানুষকে দিয়ে মাটি করল? নাকি দুর্নীতির কালো টাকা বেআইনী শেল কোম্পানির মাধ্যমে ঘুরপথে দলের নির্বাচনী তহবিলে সঞ্চিত হয়ে সাদা হয়ে গেছে। আঞ্চলিক দলগুলির ক্ষেত্রে নির্বাচনী বন্ড ওয়াশিং মেশিন ছাড়া আর কিছুই নয়। উপরন্তু পূর্বে কোম্পানিগুলি নিট মুনাফার একটা নির্দিষ্ট অংশ নির্বাচনী তহবিলে দান করতে পারত। সে বাধা উঠে যাওয়ায় শেল কোম্পানিগুলিকে ব্যবহারের আর কোন বাধাই রইল না। চিট ফান্ডে টাকা হাত বদলে তৃণমূল দলের শেল কোম্পানিগুলো তদন্তে উঠে আসলেও মোদী সরকার তদন্ত সম্পূর্ণ করার কোন উৎসাহ দেখায়নি। কারণটা এবার জানা যাবে।

স্বভাবতই বামপন্হী দলগুলি শীর্ষ আদালতের এই রায়কে সাধুবাদ জানিয়েছে। কংগ্রেস সমর্থন করেছে। কিন্তু নির্বাচনের প্রাক্কালে দুর্নীতিগ্রস্ত দলগুলির শিয়রে শমন। কর্পোরেট হাউসগুলোর মুখোশ খুলে যাবে। কিছু হাউসের প্রচুর সুবিধা প্রাপ্তির অভিযোগ তো ছিলই, এবার তার কার্য-কারণ জনসমক্ষে উন্মোচিত হবে। উর্ধসীমাহীন করের ছাড়ও বেহাত হয়ে গেল। রাজনৈতিক দলগুলির কাছে যা অনুদান, কর্পোরেট হাউসের বাস্তবে তাই ছিল বিনিয়োগ। ঘুর পথে এই বিনিয়োগ বাজারে সুনাম ক্ষুন্ন করবে বলাই বাহুল্য। না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গার জবাব দেবার কিছু থাকবে না। আপনি ডুব দিয়ে খেয়েছেন তো। এক্ষেত্রে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বিজেপি বিনা যুদ্ধে বা বিনা কৌশলে উলঙ্গ হবে না। হয় স্টেট ব্যাঙ্ক সঠিক সময়ে হিসাব দাখিল করতে পারবে না, বা নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হতে পারে। এই ভাবে নির্বাচনটা কাটিয়ে দেবার প্রচেষ্টা করবে নরেন্দ্র দামোদর মোদী সরকার। তৃণমূল মুখে সাধুবাদ জানালেও, ওরা মোদীর কৌশলের দিকে তাকিয়ে থাকবে। আমরা জানি না, এ হেন বিপদে মোদী কোন বীণ বাজাবেন।

উল্লেখযোগ্য কংগ্রেসের মত প্রাচীণ সর্বভারতীয় দল বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতায় থেকে যে পরিমান বন্ড থেকে অর্থ উপার্জন করেছে, তৃণমূল একটি মাত্র রাজ্যে শাসন করে প্রায় সেই পরিমান অর্থ আদায় করেছে। এই গোপন রহস্য উন্মোচিত হবে। নির্বাচনী বন্ডকে অসংবিধানিক ঘোষণা করায় নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার কাছাকাছি চলে এলেন। ২০১১ সালের রাজ্যের নির্বাচনে তৃণমূল কোটি কোটি কালো টাকা প্রার্থীদের মধ্যে বাটোয়ারা করে, কাউন্টার স্লিপ বস্তা ভরে পুড়িয়ে দিয়েছিল। সেই খবর বাজারে চলে আসলেও নরেন্দ্র মোদী তদন্ত করেননি। তারপর ব্যবসায়ীরা বহু চিন্তা ভাবনা করে শিল্পপতি ও রাজনৈতিক ব্যবসায়ীদের উভয়ের স্বার্থ রক্ষা করতে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার মোড়কে ভেল্কি খেলা বাজারে এনেছেন। জনগনের সামনে দিয়ে রাজনৈতিক দল কেনার টাকা প্রবাহিত হচ্ছে, কিন্তু ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কেউ কালো টাকা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে সাদা করে কোটি কোটি টাকা প্রচারে ব্যবহার করে আকাশ ঢেকে ফেলছে। টাকা নিন, কিন্তু কে দিল এবং কেন দিল জনগনকে জানতে দিন।

রাজনৈতিক দলগুলি যে অর্থ উপভোগ করে নিয়েছে, তা ফেরতের কোন নির্দেশ নেই। ক্ষতিটা কেবল রইল জনগনের জিম্মায়। আপাততঃ যে বন্ডগুলি ভাঙানো হয়নি, সেগুলি বাতিল হবে। তবে নির্বাচনে কালো টাকা ব্যবহারের এই নির্বাচনী বন্ড হিমশৈলের চূড়া মাত্র। কেন্দ্রীয় বহু নেতা প্রচারে হেলিকপ্টার বাসী হয়ে যান। এই পাখা ঘুরছে, তেল পুড়ছে, নেতা ভাসছে জনগনের থেকে শোষিত অর্থে। অরুণ জেটলি আজ আর বেঁচে নেই, কিন্তু তিনি জানতেন তাঁদের এই ভাঁওতা ভারতের সংবিধান ও জনগন একদিন ধরে ফেলবে। কারা দেশ কিনছে আর বিক্রী করছে, উভয়কে মানুষ মাথায় রেখে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন। আপনি যদি নরেন্দ্র মোদীকে ভোট দেন তাহলে জানবেন আম্বানি-আদানিকে ভোটটা দিলেন। আপনি যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেন, তাহলে শঙ্কর আঢ্যকে বিদেশে টাকা পাচার করতে ভোট দিলেন। সেনাপতির রুশ, জার্মান, ফিলিপিন্সের বান্ধবীদের অ্যাকাউন্ট ঘুরে বেহদিশ হয়ে যাবে। চৌকিদার ফাঁদে পড়েছেন, মাসি-পিসি সহ বিদায় দিন। দুর্নীতি আর ভাষণের খেলা বন্ধ হোক।