সাম্প্রতিক সময়ে মণিপুরে চলতে থাকা দাঙ্গার আগুন দিল্লির উপকন্ঠে এসে হাজির হয়েছে।নৃশংস দাঙ্গা লাগিয়ে ক্ষমতায় থাকা ফ্যাসিস্টদের একটি কৌশল। এই কৌশলই ব্যবহৃত হয়েছিল গুজরাতে,এখন সেই কৌশল ব্যবহৃত হচ্ছে মণিপুর থেকে হরিয়ানাতে। গোটা দেশ যখন হরিয়ানার এই দাঙ্গা নিয়ে সরব ঠিক সেই সময়ে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন আমাদের বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।দাঙ্গা প্রসঙ্গে মনোহর লাল খাট্টারের বক্তব্যর সমর্থন করে তিনি বলেছেন ‘I appreciate it’. কী অবাক হচ্ছেন বিজেপির বিরুদ্ধে মরণপণ করে (?)লড়াই করা মমতা এ কী বলছে।আরে মমতা বিজেপির ও লড়াই আসলে মিডিয়াতে ,আসলে দুই ফুলের তো একটাই মালি সে হলো আর এস এস।

আর এস এস থেকে দেবী দুর্গা খেতাব পাওয়া মমতা সারা বিশ্বের কাছে সমালোচিত গুজরাতের সংখ্যালঘু নিধন পর্বের পরবর্তী সময়ে গুজরাতের মসনদে নরেন্দ্র মোদী বসলে তাকে ও ফুল পাঠিয়েছি শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। কী বলেছিলেন সেদিন মমতা একটু দেখা যাক। ২০০২ই সালের ডিসেম্বর মাস ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আবহাওয়াতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল গুজরাত বিধানসভা নির্বাচন।শাসক দল বিজেপির প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে যে নরমেধ যজ্ঞ হয় যাতে বলি হয়েছিল অসংখ্য মানুষ ,যে দাঙ্গা মাথা হেঁট করে দিয়েছিল গোটা পৃথিবীর কাছে ভারতবর্ষের সেই দাঙ্গা পরবর্তী নির্বাচনে জয় লাভ করে মুখ্যমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদী।মানুষের রক্ত ভেজা পথে মসনদে অভিষেক হয় মোদীর।

এই যে রক্তাক্ত দাঙ্গার পথ ধরে মোদীর ২০০২সালে নির্বাচনে জেতা এই জয় নিয়ে সেদিন কী প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন সেই সময় তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।একটু মনে করা যাক। তিনি তখন উডল্যান্ডস নার্সিংহোমে ভর্তি,হসপিটালের বেডে বসে তিনি সাংবাদিকদের জানান “গুজরাতের এই রায় তিনি মেনে নিচ্ছেন ,তিনি বিজেপির এই জয়ে খুশি”।শুধুমাত্র এই টুকু বলেই তিনি সেদিন থেমে জাননি তিনি আরও বলেন “১৯৯২সালেও তো কলকাতাতে দাঙ্গা হয়েছিল “।ভেবে দেখুন ১৯৯২সালে আর এস এসের শাখা সংগঠন গুলির নেতৃত্বে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর দেশজুড়ে যে সাম্প্রদায়িক হিংসার পরিবশ সৃষ্টি হয়েছিল কলকাতা শহরে সেই ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছিল কিছু দুষ্কৃতী কিন্ত কমরেড জ্যোতিবসুর কড়া পদক্ষেপে আর বামফ্রন্টের কর্মীদের সজাগ পাহারার কারনে দাঙ্গা কারীরা সফল হয়নি।গুজরাতের যে নরমেধ যজ্ঞ তার সঙ্গে কোনও ভাবে কলকাতার এই বিক্ষিপ্ত ঘটানা গুলির তুলনা চলে।কিন্ত মমতাদেবী সেদিন নরেন্দ্র মোদীর হয়ে যুক্তি সাজাতে গিয়ে সেই দুর্বল যুক্তির ই আশ্রয় নিয়েছিলেন। আসলে এতটাই গভীর সখ্যতা মমতার আর বিজেপির যে একে অপরের বিপদে সঙ্কটমোচনের ভূমিকা নেন।শোনা যায় এই হসপিটালের বেড থেকেই নাকি মমতাদেবীর তরফ থেকে মোদীর কাছে গুজরাতের জয়ের জন্য গোলাপের তোড়া গেছিল। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মমতা নেতৃত্ব দেবে কী যে কন কর্তা একথা শুইনা ঘোড়াও হাসবো।