ভারতবর্ষে  মেধার উৎকর্ষতার বিচারে আই আই টি খড়্গপুর প্রথম দিকেই থাকে।এই কেন্দ্রে ভর্তি হওয়ার জন্য  ছাত্রদের  মেধাবী হওয়াটা জরুরি।এমনই এক যোগ্য মেধাবী ছাত্র ছিলেন ফয়জান আহমেদ।এই প্রতিষ্ঠানে Robotics নিয়ে পড়বার আগে সর্বভারতীয় স্তরে আই আই টির যে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয় সেই পরীক্ষাতে ওর র‍্যাঙ্ক ছিল ১১।

 এরকম একজন প্রতিভা আগামীতে দেশের ভবিষ্যত হতে পারতো তাকেই অকালে পৃথিবী থেকে চলে যেতে হলো মর্মান্তিক ভাবে।

২০২২ সালের ১৪ ই অক্টোবর আই আই টি খড়্গপুরের  হোস্টেলের ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় মেধাবী ছাত্রটিকে। ৩ দিন আগে মৃত্য হলেও কোনওরকম দুর্গন্ধ ছড়ায় নি।

২০২২ সালের ১৪ ই অক্টোবর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়জান আহমেদের দেহ উদ্ধার হয় হোস্টেল থেকে। প্রথম ময়নাতদন্তে মৃত্যুর কারণ হিসাবে দেখানো হয় “আত্মহত্যা”।

 ফয়জানের মায়ের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করেনি ছেলের মৃত্যুর আসল কারণ জানতে তিনি শুরু করলেন এক হার না মানা লড়াই।

সুবিচার চেয়ে চিঠি লেখেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে। কিন্তু সুবিচার মেলেনি। শেষে বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ফয়জান আহমেদের পিতা সেলিম আহমেদ। বিচারপতি রাজশেখর মান্থা দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের আদেশ দেন।

বিচারপতি মান্থার আদেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে আই আই টি খড়্গপুরের কর্তৃপক্ষ। আর আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে আমাদের রাজ্যের তৃণমূল সরকারও বিচারপতি মান্থার এই নির্দেশের বিরুদ্ধে মামলা করে ।

একজন ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যর ঘটনায় তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়ার মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ছিল মমতা ব্যানার্জীর সরকারের। অথচ তা না করে আই আই টি খড়্গপুরের কর্তৃপক্ষের সাথে মামলা করলো মমতা ব্যানার্জীর সরকার।

ডিভিশন বেঞ্চে বিচারপতি মান্থার নির্দেশ বহাল থাকে। ডিভিশন বেঞ্চ তিরস্কার করে  আই আই টি খড়্গপুরের  ডিরেক্টরকে। অসমের তিনসুকিয়া থেকে দেহ তুলে এনে কলকাতায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পরিবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। দ্বিতীয়বারের ময়নাতদন্তে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ অজয় গুপ্ত তাঁর রিপোর্টে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেন  “ফয়জান আহমেদ’কে খুন করা হয়েছে”।

ফয়জান আহমেদের খুনের  পর আজ এতগুলো  মাস অতিবাহিত হয়েছে ।ফয়জান এর খুনিরা করেছে দিব্য ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুত্রহারা মা-বাবা এখনও বিচার পেল না। 

সরকারের সদিচ্ছা থাকতো  প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে তাদের শাস্তি দেওয়া অবশ্যই সম্ভব হতো।

যাদবপুরে তৃণমূলের বন্ধু সংগঠনের হাতে স্বপ্নদ্বীপের মৃত্যুর পর মুখ্যমন্ত্রী যে তৎপরতার সাথে তার বন্ধু সংগঠন কে বাঁচাতে এই জঘন্য হত্যার দায় সিপিআই(এম)-র উপর চাপাতে চেয়েছেন সেই তৎপরতা ফয়জান হত্যা মামলার ক্ষেত্রে দেখালে এতদিনে অপরাধীরা শাস্তি পেতেন।কেন ফয়জান আহমেদ এর হত্যার প্রসঙ্গে নীরব মুখ্যমন্ত্রী?

আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ ফয়জান আহমেদের খুনীদের শাস্তির দাবীতে আওয়াজ তুলুন যাতে একজন পুত্রহারা মা-বাবা বিচার পায়।

স্বপ্নের হত্যার বিচার চাই সাথে সাথে ফয়জানের হত্যার ও বিচার চাই।