আনিস খান। বয়েস ২৮।আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্ব ও সামাজিক আন্দোলনের কর্মী। এছাড়াও কারুর সন্তান,কারুর দাদা,কারুর ভাই কিংবা কারুর বন্ধু কমরেড।


এই পরিচয়টুকুর জন্য একটা ছেলেকে খুন হতে হয় আমার রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গে।রাতের অন্ধকারে খোদ পুলিশ পাঠিয়ে শারীরিক অত্যাচার করে,ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে হত্যা করা হয়েছে আনিস কে। ছেলেটার দোষ বলতে, ও রাষ্ট্রের দিকে আঙুল তুলে নায্য দাবীর লড়াই লড়েছিল। ফলতঃ মৃত্যু ছাড়া গতি কি!!

পশ্চিমবঙ্গ, আমাদের রাজ্য। ভারতের গুরুত্বপূর্ণ একটা অঙ্গ। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে স্বাধীন ভারতের রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন, সবকিছুই দেখেছে এই রাজ্যের মাটি।কলকাতা শহরের অলিগলি থেকে গ্রাম বাংলার মাঠঘাট,অন্যায় বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অভ্যাস সর্বত্র। আনিসও এদের থেকে ভিন্ন নয়। স্বাধীনতার পূর্বে যেমন বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে কথা বললে শাস্তি পেতে হতো, কখনও বা মৃত্যুদণ্ড আবার কখনও কারাবাস…ঠিক সেরকমই মমতা সরকারের বিরোধিতার জন্যে প্রান গেলো আনিস খানের,আর আনিস খুনের বিচারে চাইতে গিয়ে কমরেড মীনাক্ষী মুখার্জি-সহ ১৫জন জেল কাস্টডিতে রাত কাটাচ্ছেন। এছাড়াও বহু কমরেড ভীষণভাবে আহত-আক্রান্ত মমতা ব্যানার্জির দলদাস পুলিসের দ্বারা।

তবে এই ঘটনা নতুন নয়, ২০১১ সালে এ রাজ্যের পালাবদলের পরবর্তী সময়ে পুলিশি হেফাজতে নৃশংস ভাবে পিটিয়ে খুন করা হয় কমরেড সুদীপ্ত গুপ্তকে,শুধু তাই নয় সইফুদ্দিন মোল্লা,স্বপন কোলে মইদুল ইসলাম মিদ্যার রক্তে ভিজে আছে এ বাংলার মাটি। শহীদ কমরেডদের রক্তঋণ শোধ করতে দৃঢ় প্রত্যয়ী আমরা। আমাদের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়েই আনিসের খুনীদের শাস্তি সুনিশ্চিত করতে আমাদেরই হবে। আর ততদিন পর্যন্ত আমাদের লাগাতার লড়াই আন্দোলন চলবে,যতদিন পর্যন্ত আনিসের খুনীদের শাস্তির ব্যবস্থা না করা হয়।।

অন্যদিকে, কর্মসংস্থানের নামে শিক্ষিত বেকার যুবকদের ভবিষ্যতকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে যারা তার নাম তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই প্রহসনের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে এগিয়ে চলার দিশা দেখাচ্ছে SFI-DYFI-এর মত বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠন।

মোদ্দা কথা, এই দেশের বুকে যেমন প্রায় ২০০বছরের পুরোনো ইংরেজ শাসনকে পরাস্ত করা হয়েছিল বামপন্থী ঘরানার আন্দোলনের হাত ধরেই,এবং ঠিক সেই ভিবেই, মূলত রাজ্যের বুকে আধা-ফ্যাসিবাদী ও ফ্যাসিবাদী যে শক্তি সাধারণ মানুষকে যে শোষণ করছে, গণতন্ত্রে হস্তক্ষেপ করছে,কেড়ে নিচ্ছে কথা বলার অধিকার তাদের নির্মূল না করা পর্যন্ত এই লড়াই চলবেই।

বর্ণনা মুখোপাধ্যায়

(লেখকের নিজস্ব মতামত )