হিন্দুত্ব কী আমার জানা নেই। তবে হিন্দুধর্ম এক বহমান মহানদীর মতো।

নামটি তুলনায় অর্বাচীন হলেও স্রোতটি অনেক কালের। কত জলধারা মিশেছে এ প্রবাহে। কত শাখানদী প্রাণ পেয়েছে এই নীরে।

ধর্ম নয় , বরং ঐতিহ্য বা সংস্কৃতি বলা ভাল। আব্রাহামিয় সেমেটিক ধর্মগুলির সঙ্গে পার্থক্য অনেক।

অর্গল বা বাতায়ন রুদ্ধ করে দেওয়ার প্রয়াস তুলনায় অনেক কম। কেবলমাত্র একটি গ্রন্থের নিগড়ে বদ্ধ নয়। বেদ, উপনিষদ , পুরাণ নয় বরং মহাকাব্যগুলিই ভক্তিরসে প্লাবিত করে এসেছে, অনুশাসনে নয়।

বর্ণাশ্রম কিংবা মনুসংহিতার বিপরীতে লোপামুদ্রা বা অপালার কথা তো আমরা ভুলে যাই নি।

এই উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আচারের ভিন্নতাই এর সৌন্দর্য্য। শৈব , শাক্ত , গাণপত, বৈষ্ণব এমনকি নাস্তিকও এই সভ্যতার শরিক হতে পারেন।

চার্বাক বারবার প্রশ্ন তুলেছেন। আদি শঙ্করাচার্য দ্বৈত অদ্বৈত নিয়ে বিতর্কে ব্রতী হয়েছেন। আমাদের ঘরের ছেলে নিমাই হরিনামকে শস্ত্র করে তুলেছিলেন।

আমাদের ছেলেবেলায় ইতিহাস বইএ পড়া ‘ বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য ‘ কিংবা রবি ঠাকুরের ‘ এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে ‘ তো কেবল কথার কথা ছিল না।

সনাতনের কথা যাঁরা বলছেন তাঁদের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলছি – ইতিহাস খুলে দেখুন – কোনো পাতাতেই এমন একদেশদর্শীতার উদাহরণ খুঁজে পাবেন না। যাবতীয় ধারণাকে ধারণ করার অপর নামই আমার ভারতবর্ষ।