যার অক্সিজেন কমে যায় মাথায় সে অনুব্রত বলছে টিভি ফেটে হয়েছে। আর নবান্ন থেকে বলা হলো ওর মাথার অক্সিজেন কমে গেছে। বালিখাদানের টাকা, চোরা চালানের টাকা, পাথর খাদান থেকে ট্রাক বের হয়, ডাম্পার বের হয় বেআইনি ভাবে টোল কাটা হয়। বেআইনি ভাবে তোলাবাজির জন্য কাটা টোল যে টাকা ঘুরে ফিরে আসে ভাইপোর অ্যাকাউন্টে পুলিশের মারফত, এসপির মারফত।


আর এই তোলাবাজির টাকার ভাগ কে পাবে ওখানে সেটা ঠিক হবে কে কত বুথ দখল করতে পারবে। পৌর নির্বাচনে যে হাঙ্গামা হয়েছে, যে ভোট লুঠ হয়েছে আর বালিখাদানের নামে, কয়লাখাদানের যে প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠ করার পরিকল্পনা হচ্ছে এতো আলাদা না। ভোট লুঠ করার জন্য যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেছিলেন বিরোধী শূন্য করতে হবে, সব দখল করতে হবে। তার দায় তাঁকে নিতে হবে। ভোটের দিন খুনোখুনি হলো ,তার আগেও হয়েছে। বুথ দখল হলো, তারপরেও যেহুতু রামপুরহাটের ১৭ নং ওয়ার্ডে সিপিআইএম জিতল কেন? ভোট লুঠের জন্য যেরকম সব জায়গায় করা হয়েছে বুথদখলের জন্য আশেপাশের যত মস্তান, তৃণমূলের যত মন্ত্রী, এমএলএ, গুন্ডা তাদের সবাইকে এক একটা ওয়ার্ড বেছে দেওয়া হয়েছিল। কলকাতা পৌরসভা থেকে এরকম আমরা সর্বত্র দেখেছি । এই পৌরসভা নির্বাচনে বগটুই গ্রামের দায়িত্ব ছিল যে ভোট লুঠ করতে হবে। কালকে উপপ্রধান খুন হলেন, ঝালদায় কংগ্রেসের কাউন্সিলর খুন হয়েছে, পানিহাটিতে তৃণমূলের কাউন্সিলর খুন হয়েছে। দোলের দিনে যে বিভিন্ন জায়গায় গন্ডগোল হয়েছে, বোমাবাজি হয়েছে , গুলি চলেছে, খুন হয়েছে প্রত্যেকটার লিঙ্ক রয়েছে কোন গোষ্ঠী কোন পক্ষে দাঁড়িয়েছে ।

কালকে ভাদু শেখ খুন হলো কারণ তৃণমূলের যারা ডিসিআর কাটে কোটি টাকা প্রত্যেক দিন আয় করে ওখানে নকল টোল বানিয়ে, তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখের সাথে কথা হয়েছিল যে তোমরা টাকার ভাগ পাবে, ওই ডিসিআরের, ওই নকল টোলের অংশ পাবে। এই বলে সবাইকে কাজে লাগানো হয় হারামের টাকা পাবে, লুঠের টাকার ভাগ পাবে। আর তারপরেও যখন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিআইএম জিতে গেছে তখন তাদের ওপর দোষ চেপেছে তোমরা থাকতে কি করে হলো? তাহলে তোমরা লুঠের টাকার ভাগ পাবেনা। আর খুনের প্রতিশোধে বগটুই গ্রামে কাল সারারাত ধরে বোমাবাজি হয়েছে, গুলিবর্ষণ হয়েছে, আগুন জ্বালানো হয়েছে। কালকে তিনটে লাশ, আজকে সাতটা লাশ। সারারাত ধরে ফায়ার ব্রিগেড আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছে। তারপর আবার সকাল আটটায় বদল হয়ে আবার নতুন ফায়ার ব্রিগেড টিম গেছে। ফায়ার ব্রিগেডের ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে কিন্তু তৃণমূলের কর্মীরা খুনোখুনি করতে ক্লান্ত হচ্ছেনা। আসল কারনটা খুজতে হবে কোথায় কেন শুরু হচ্ছে। কারণ, ওই জেলাতেই পুলিশের গাড়িতে বোমা মারার জন্য বলেছিলেন অনুব্রত । মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন থাম ভাই একটু আমি দেখে নেব, দুষ্ঠুমি করে মাঝে মধ্যে। পুলিশ কিছু করেনি। ওই জেলাতেই হেলথ সেন্টারে বোমার গুদাম পাওয়া গিয়েছিল, সরকার ধামাচাপা দিয়েছে কিছু করেনি। গোটা রাজ্যে যখন বোমা কারখানায় বিস্ফোরণ হয়, তৃণমূলের অফিসে বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণ হয়, মানুষ খুন হয় ধামাচাপা দেওয়ার জন্য রাতারাতি তাকে কবর দিয়ে দেওয়া হয়, পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ এবং সংবাদপত্র কিছু বলেনা ধামাচাপা দেয়, দুর্ভাগ্য আমাদের। কিন্তু সবসময় ধামাচাপা দেওয়া যায়না, বরং এসব ঘটনা বাড়ে। পরিবর্তনের নামে যে ব্যবস্থা নিয়ে আসা হয়েছে, মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের নামে যেভাবে সত্য কে গোপন করা হচ্ছে আজকেও তাই হবে ।

আজকে একজন দালাল ,একসময় সাংবাদিক ছিলেন, সম্পাদক ছিলেন সাংসদ হয়েছেন, টুইট করেছেন এই নিয়ে রাজনীতি করবেন না, সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যারা মিডিয়া কে ফোন করে বলে এই হেডলাইন করবেন না, এই হেডলাইন করবেন । এই খবর দেবেন না, এই খবর দেবেন । ধামাচাপা দেবে?। আমি দাবি করছি পাশের বনহাট গ্রাম যেখান থেকে তৃণমূলের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে বগটুই গ্রামে। পুলিশ প্রথমে গিয়ে পুরো অঞ্চল ঘিরে বেআইনি অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করুক। সমস্ত বোমা এবং বোমা কারখানা উদ্ধার করুক। তারপর অন্য জায়গায় হবে, করবে পুলিশ। SIT কি করবে ধামাচাপা দেবে? । SIT মানে Suppression information And Truth. এটাই SIT, আর সেই কাজটাই করা হচ্ছে। বালিখাদানে যারা বেআইনি টাকা রোজগারের লোকেরা, সরকারি উচ্চপদস্থ আমলাদের অফিসে এবং বাসস্থানে বোমা ফেলেছিল সিউড়িতে গিয়ে। কোনো মামলা হয়েছে? কোনো ব্যবস্থা হয়েছে?। মুখ্যমন্ত্রী বলেদিলেন বালি খাদান হবে না, তারপর বললেন ভাগাভাগি হবে ৭৫% আর ২৫% ভাগাভাগি ভাইপো আর পিসির মধ্যে। সেইসব টাকা গুলো এহাত, ওহাত হয়ে বিদেশে পাচার হবে। আর মারা যাবে গরীব, নিরীহ মানুষ গুলো। আমি বলব দোহাই, এই যে কাশ্মীর ফাইলস থেকে যা দেখছি ” হিন্দু না ওরা মুসলিম এই জিজ্ঞাসে কোন জন হে, কাণ্ডারি বল ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা’র ” আজকে প্রতিদিন মানুষ খুন হচ্ছে। আমরা জানিনা এটা এক ডজনের বেশি হবে কিনা?। প্রত্যেক টা মানুষের মৃত্যুর দাম আছে।আর আমি সেই মানুষ গুলোকে বলব, যারা আক্রান্ত হচ্ছে সে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের শিকার হোক, সিন্ডিকেটরাজের শিকার হোক তাদের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ গিয়েছিল আক্রমন থেকে বাঁচতে, সন্ত্রাস থেকে বাঁচতে প্রাণ বাঁচাতে তৃণমূলের ঝান্ডা ধরে ছিল তারা । তৃণমূলের ঝান্ডা ধরেও তারা নিরাপদ নয়। গতকাল বালিগঞ্জে উপনির্বাচনে আপনারা দেখেছেন যারা বাম শিবির থেকে গিয়েছিল কাউন্সিলর ছিল, ex-MIC ছিল, এখনও তার বউ কাউন্সিলর কর্মী সভায় ধারালো অস্ত্র নিয়ে মারামারি করেছে, রক্ষপাত হয়েছে। কে কাকে বাঁচাবে? একসময় মমতা ব্যানার্জী বলতেন যত খুনি , যত দাগি, যত ধর্ষক, যত লুঠেরা আমার স্মরণে আসো আমি তোমাকে বাঁচাব পুলিশ কোন মামলা দেবে না। যাদের ওপর মামলা আছে তাদেরকে বাঁচানো হবে । আজকে বিজেপি বলছে আমার স্মরণে এসো ইডি, সিবিআই থেকে বাঁচানো হবে। এই করে যারা সবচেয়ে বেশি খুনি, দাগি, মস্তান তাদের নেতা কালো টাকা পাচারকারি তারা সবাই এদল থেকে ওদলে যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী আর রাজ্য বাহিনী তাদেরকে নিরাপত্তা দিচ্ছে । সাধারণ মানুষ, সমর্থক , দরদি, অরাজনৈতিক লোক হোক কিংবা সে যে কেউ হোক তারা নিরাপদ নয়। রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ প্রমাণ করেছে পুলিশ নিজেও নিরাপদ নয়। একটা প্ল্যান পোস্টিংয়ের জন্য উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসাররা দলদাসে পরিনত হয়েছেন। পুলিশের পর পুলিশ খুন হয়েছেন তাদের এই মেরুদন্ড নেই যে তারা অপরাধী কে ধরার চেষ্ঠা করবে। দার্জিলিং থেকে মেটিয়াবুরুজ পর্যন্ত আমরা দেখেছি পুলিশ খুন হয়েছে। তৃণমূলের হাতে পুলিশ খুন হচ্ছে। পুলিশের হাতে তৃণমূলের খুন হচ্ছে। পুলিশের নাম করে তৃণমূলের খুন, অথবা তৃণমূলের নাম করে পুলিশের খুন হচ্ছে। পুলিশ আর তৃণমূলের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই। তাই যদি শান্তি ফিরিয়ে আনতে হয় এই অরাজক অবস্থা থেকে বাংলা কে মুক্ত করতে হবে। মানুষের মধ্যে যদি সম্প্রীতি আবার গড়ে তুলতে হয় তাহলে এই খুনের রাজনীতি, এই গণহত্যার রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমার কাছে হেলিকপ্টার নেই, মন্ত্রী হেলিকপ্টার নিয়ে ছুটবেন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করবেন। নবান্ন থেকে কিছু ঘোষণা হবে। পুলিশ অফিসাররা কিছু কথা বলবে ।

কিন্তু আমাদের কর্মীরা সেখানে গিয়েছেন, ওখানে তৃণমূল ঢুকতে পারছে না কিন্তু আমাদের কর্মীরা গিয়েছেন । আমরা সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করছি। কিন্তু প্রথম কথা হচ্ছে অস্ত্র উদ্ধার করা। গোটা রাজ্য থেকে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। সমস্ত বেআইনি অস্ত্র কারখানা গুলোকে বন্ধ করতে হবে । আর যেখানে বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে সেই বোমার সাপ্লাই কোথা থেকে হচ্ছে দেখবেন ” সেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখ তাই , পাইলেও পাইতে পার তৃণমূলের রতন।”