পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি বামেদের তথা সিপিআই(এম)-র শক্ত ঘাঁটি, এই ঘাঁটি না ভাঙ্গতে পারলে তৃনমূলেশ্বরীর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সম্ভব ছিল না।বাংলার মসনদে বসবার জন্য সেদিন মমতা দেবী হয়ে উঠেছিলেন উদগ্রীব। যে কোনও ভাবে তাকে মুখ্যমন্ত্রী হতেই হবে।অতএব খেজুরির বামদূর্গ ভাঙ্গার দায়িত্ব দেওয়া হলো নন্দীগ্রাম ষড়যন্ত্রের নায়ক শুভেন্দু অধিকারীর উপর।শুরু হলো বামেদের খেজুরি দখল করবার অভিযান। সিপিআই (এম)কর্মীদের উপর অত্যাচার, তাদের এলাকা ছাড়া করা ,জরিমানা করা,তাদের চাষের জমি দখল করে নেওয়া থেকে সম্পত্তি লুঠপাট,মহিলা কর্মীদের শ্লীলতাহানি সব অস্ত্রই সেদিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে শুভেন্দু প্রয়োগ করেছিল সেদিন খেজুরিতে।
তারপর কেটে গেছে প্রায় তেরো বছর। সেদিন খেজুরির সিপিআই (এম) কর্মীদের উপর আক্রমণকারী মমতার বিশ্বস্ত সেনাপতি শুভেন্দু দলবদল করে আজ বিজেপির নেতা।


কিন্ত সেই সিপিআই(এম)কর্মী তারা কিন্ত এতো অত্যাচার সহ্য করেও অপেক্ষা করছিলেন সময়ের সুযোগের। আর সময় আসতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তারা।আর তাদের এই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে কৃষক সভা।তৃণমূলের মাতব্বরেরা তাদের চাষের যে জমি দখল করেছিল শুরু হয়েছে সেই চাষের জমি উদ্ধারের কাজ।
দীর্ঘ ১৩ বছর পর গরিব চাষী তার চাষ -জমি পুনর দখল করল কৃষক- খেতমজুর সংগঠনের নেতৃত্বে।


পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরি থানার টিকাশি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার উত্তর কলমদান গ্রামের গরিব কৃষক রাসবিহারী মাইতি সহ পাঁচজন চাষী তাদের ১ একর২৯ ডিসবিল জমি দীর্ঘ ১৩ বছর এলাকার তৃণমূলী দুর্বৃত্তরা দখল রাখার পর ওই গ্রামের কৃষক খেতমজুর সংগঠন লাল ঝান্ডা কাঁধে নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে, গরিব চাষীদের জমি উদ্ধার করেন।


টিকাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর কলমদান মৌজায় ৩৮২, ১২০২ ২৩৭০ এর খতিয়ানে ১৬৭২ দাগে ১ একর ২৯ ডিসমিল জমি যা রাসবিহারী মাইতি, সুকুমার মাইতি, গুরুপদ মাইতি, জোৎস্না মাইতিদের ছিল। সেই জমি আবার ফিরে ফেল চাষিরা । এই ঘটনার ফলে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই একই মৌজার ৫ জন পাট্টাদার শ্রীকান্ত মন্ডল, ভরত বারুই, প্রতাপ বারুই, তাপস বারুই, মনোরঞ্জন দীক্ষিতের বেদখল হওয়া ৫৪ ডিসমিল জমির অধিকার ফিরে পায় পাট্টাদাররা।


পশ্চিম মেদিনীপুর সিপিআই(এম)র আরেক শক্তিশালী দুর্গ ১১সালে পালাবদলের আগে পরে ভয়ংকর অত্যাচার হয়েছে সিপিআই(এম)কর্মী,সমর্থক থেকে নেতৃত্বের উপর। গভীর ষড়যন্ত্র করে জেল বন্দি করা হয়েছিল এই জেলা তথা রাজ্যের অন্যতম বাম নেতা সুশান্ত ঘোষ কে।কিন্ত সময়ের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে, আজ পশ্চিম মেদিনীপুরে পার্টির জেলা সম্পাদক কমরেড সুশান্ত ঘোষের নেতৃত্বে পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে মানুষ।১৬ই আগস্ট তৃণমূলের চোর নেতাদের অবিলম্বে গ্রেফতার দাবিতে মেদিনীপুর শহরের জেলা শাসকের দপ্তরে স্মারক লিপি দেওয়ার জন্য মিছিল শুরু হয় কমঃসেলিম,কমঃ সুশান্ত ঘোষের উপর। মিছিল শুরু হওয়ার আগেই তৃণমূলের বাহিনী আক্রমণ করে মিছিলের উপর, তারপর মিছিল ভাঙ্গতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে মিছিলের উপর। আহত হন ১৬জন পার্টি কর্মী।কিন্ত এত আক্রমণ করেও তৃণমূলের সমাজবিরোধী আর পুলিশ আটকাতে পারেনি ওই মিছিল।কমরেডদের প্রতিরোধের মেজাজ দেখে ভয়ে এলাকা ছাড়া হয় তৃণমূলীরা,সিপিআই(এম)দলদাস পুলিশের সমস্ত আক্রমণ অগ্রাহ্য করে ব্যারিকেড ভেঙ্গে দখল নেয় জেলা শাসকের দপ্তরের ক্যাম্পাস।
দীর্ঘ ৭ বছর ধরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ চলছে, পরীক্ষা, নিয়োগ, ভর্তি ঠিকমতো চলছে না। এই দুর্নীতি, অরাজকতার বিরুদ্ধে এস এফ আইয়ের নেতৃত্বে মিছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গেটে তালা লাগিয়ে দেয় কিন্ত ছাত্র কমরেডরা তালা ভেঙ্গে ,পাঁচিল টপকে প্রবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলতে থাকে তাদের অবস্থান বিক্ষোভ। অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয় তাদের সঙ্গে কথা বলতে এবং তাদের অভিযোগ পত্র নিতে।
রাস্তা ঘাটে হাটে বাজারে সর্বত্র মানুষ বলতে শুরু করেছে যে এই সরকার টা চোরদের ।ক্রমশ “চোর ধরো জেলে ভরো শ্লোগান “আমজনতার শ্লোগানে পরিনত হচ্ছে।রাজ্যের সর্বত্র তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ভয়ংকর ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের বিদ্রোহের।