পরিকাঠামোর অভাবে কর্পোরেশনের স্কুল গুলো দিনের পর দিন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে, স্কুলে শিক্ষক নেই, পড়াশোনার উপযোগী পরিকাঠামো নেই, ফলে ছাত্রছাত্রীরা ক্রমশ স্কুল বিমুখ হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে ফেরাতে হলে অবিলম্বে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে, এবং পঠনপাঠনের জন্য উন্নত পরিকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে বাম জনপ্রতিনিধি দ্বারা পৌর পরিষেবা পরিচালনা করার যে সুযোগ আমরা পেয়েছি, তার ভিত্তিতেই এখানকার বিবেকানন্দ গার্লস স্কুলে একটি কমিউনিটি কিচেন চালানোর ব্যবস্থা করা গেছে। আমরা দেখছি ছাত্রছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ মিড ডে মিলের পরিমাণ কমছে, স্কুলে থেকে মিড ডে মিলের সামগ্রী চুরি হয়ে যাচ্ছে আর মিড ডে মিলের বাজেটের টাকায় তৃণমূল নেতা মন্ত্রীদের পকেট ভরানো হচ্ছে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কর্পোরেশন স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের পাঠনপাঠনের উপযুক্ত ব্যবস্থা রয়েছে,কাউন্সিলর প্রতিনিয়ত এই স্কুলের প্রয়োজনীয় নানান সুযোগ সুবিধা থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীদের যা কিছু জরুরী তার জোগান দিয়েছেন এবং স্কুলছুট দের স্কুলে ফেরানোর দায়িত্ব পালন করেছেন।

অনান্য ওয়ার্ডে কর্পোরেশন স্কুলগুলির বেহাল দশা, কর্পোরেশনের স্কুল চালানোর জন্য, শিক্ষকের বেতনের জন্য, মিড ডে মিলের জন্য এবং ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর জন্য নির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ থাকে তারপরও পরিকাঠামোর অভাবে কলকাতার বহু ওয়ার্ডের কর্পোরেশন স্কুল গুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে কর্পোরেশনের স্কুল পরিচালনার জন্য নির্ধারিত বাজেটের অর্থ যাচ্ছে কোথায়? এই প্রশ্নের উত্তর ওই ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিদের দিতে হবে। সাধারণ মানুষ আমাদের সুযোগ দিলে আমরা বস্তি বা প্রান্তিক এলাকাতে কমিউনিটি লার্নিং সেন্টার গড়ে তুলব। গরীব মেধাবী ছাত্র যার বাবা কিংবা মা এই লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন, তার প্রাথমিক শিক্ষা পাওয়ার একমাত্র সুযোগ হচ্ছে এই কর্পোরেশন স্কুলগুলো। আগামী দিনে কিভাবে কর্পোরেশন স্কুল গুলোকে আরও উন্নত করা যায় তার জন্যে চাই সঠিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন।

কলকাতা শহরজুড়ে বিপজ্জনক বৈদ্যুতিন তারের শামিয়ানা তৈরি হয়েছে, মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কানারাজা বাগান অঞ্চল একটি বিস্তৃত বস্তি এলাকা, এখানে প্রায় ৫০০ এর বেশি পরিবার বসবাস করে। এই এলাকায় বিপদজনক তার মানুষের নাগাল থেকে দূরে সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী দিনে যদি বামপন্থী প্রতিনিধিকে আবারও সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে পরিকল্পনার মাধ্যমে সিইএসসি এর সঙ্গে কথা বলে কিভাবে সমস্ত জায়গা গুলি থেকে মানুষের আশা যাওয়ার রাস্তা থেকে বিপদজনক তার সরিয়ে নেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করা হবে।

নিকাশির ক্ষেত্রে আগের থেকে বর্তমানে ১০ নম্বর ওয়ার্ড বেশ উন্নত। ভালো নিকাশি ব্যবস্থার ফলে আশেপাশের ওয়ার্ড গুলির তুলনায় কম জল জমে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। জল জমার অন্যতম কারণ হচ্ছে শহরজুড়ে পড়ে থাকা আবর্জনা, বিগত নির্বাচনের আগে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল এই ওয়ার্ডে কম্প্যাক্ট ভ্যাট মেশিন বসানোর। নির্বাচনে জয় হওয়ার পর সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই ওয়ার্ডকে আবর্জনা মুক্ত করার জন্য কম্প্যাক্ট ভ্যাট মেশিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কলকাতা শহরজুড়ে আলোর সমস্যা রয়েছে, ত্রিফলা কেলেঙ্কারি তো কারোর অজানা নয়। শহরের রাস্তায় অন্ধকারের ফলে অসামাজিক শক্তির দাপাদাপি বেড়েছে, নারীদের সুরক্ষা থেকে শুরু করে অঞ্চলে অঞ্চলে বেকার যুবদের নেশার ঠেক তৈরি হচ্ছে। ১০ নং ওয়ার্ডে বিকল্প নীতির ফলে এই ওয়ার্ডের সমস্ত রাস্তায়, গলিতে উন্নত এলইডি আলোর ব্যবস্থা করা গেছে। আগামী দিনে এই নজির যেন গোটা কলকাতায় ছড়িয়ে পড়ে।

প্রচারে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বামফ্রন্ট প্রার্থী

তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা অঞ্চলে ভোট গণনার মাধ্যমে কাজ করে, কোন পাড়া তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে কিংবা দেয়নি তার ভিত্তিতে কাজ হয়। জনপ্রতিনিধিদের কাজ হচ্ছে দলিয় পতাকা ছেড়ে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করা। কর্পোরেশন নির্বাচন সাধারণ মানুষের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সাধারণ মানুষের রোজকার জীবন যাপনের নানান সুযোগ সুবিধা জড়িয়ে থাকে পৌর পরিষেবার সাথে,ফলে এই কর্পোরেশনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কাজ হচ্ছে দলমত নির্বিশেষে সমস্ত ধরনের পৌর পরিষেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া।অন্যান্য ওয়ার্ডে মানুষের অভিযোগ তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা শুধুই দলিয় কর্মীদের কাউন্সিলর, অপরদিকে ১০নং ওয়ার্ডের বামপন্থী কাউন্সিলর করুণা সেনগুপ্তর পরিচয় হলো যে তিনি গোটা অঞ্চলের সকলের কাউন্সিলর। তার কাছে কেউ কাজ নিয়ে গেলে একটি টাকা ঘুষ দিতে হয়না, কারোর সুপারিশের সাহায্য নিয়ে যেতে হয়না, বিনা কাজে কেউ ফেরত যায়না। উনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে দলমত নির্বিশেষে মানুষের পাশে থাকার কাজ করে গেছেন, নির্বাচনের ফলাফলে তার হেরফের হবে না।

কলকাতা শহর ঐতিহাসিক শহর, শহরের অলিগলিতে নানান ঐতিহাসিক স্থাপত্য রয়েছে। এর মধ্যে অনেক স্থাপত্যই বর্তমানে পরিচর্যার অভাবে ভঙ্গুর অবস্থায় পরিণত হয়েছে। আমরা জানি আমাদের দেশের এবং রাজ্যের বর্তমান সরকার আমাদের বেড়ে ওঠার ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিয়ে চাইছে।এই ঐতিহাসিক স্থাপত্যগুলির রক্ষণাবেক্ষণের কাজকে আগামী দিনে গুরুত্ব দিতে হবে। এই শহরের ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত করে রাখার লক্ষ্যে এই এলাকার ঐতিহাসিক শোভাবাজার নাট মন্দির, যা প্রায় ভঙ্গুর অবস্থায় চলে গিয়েছিল তা পূর্ণ সংস্কার করা হয়েছে। বামপন্থী জনপ্রতিনিধিরা যদি সুযোগ পায় তাহলে শহর জুড়ে ঐতিহাসিক স্থাপত্যগুলীর রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।

কলকাতা শহর জুড়ে পানীয় জলের একটা বড় সমস্যা, বস্তি এলাকার মানুষেরা প্রতিদিন এই সমস্যার সম্মুখীন হোন। এই পরিস্থিতিতেও কলকাতা শহরের বামপন্থী কাউন্সিলররা যেখানে যেখানে নির্বাচিত হয়েছেন তারা সেখানে চেষ্টা করেছেন পানীয় জল বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার।

কর্মসংস্থানের অভাবে এরাজ্যে আমরা দেখেছি একজন পিএইচডি পাশ যুবককে ডোমের কাজের জন্য আবেদন করতে। দীর্ঘ লকডাউনের ফলে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এবং ১০০ দিনের কাজে যোগ দিচ্ছেন। যারা ১০০ দিনের কাজ করেন তাদের থেকেও কাটমানি খায় স্থানীয় তৃণমূল নেতারা,কাজ হারানোর ভয় দেখিয়ে বলপূর্বক তাদের তৃণমূলের মিটিং মিছিলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অথচ তাদের আগামী জীবন নিয়ে কোন পরিকল্পনা নেই তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহারে;সেখানে বামপন্থীরা নির্বাচনী ইস্তেহারে এ কথা বলেছেন যে যদি বামপন্থীরা কর্পোরেশন পরিচালনা করার সুযোগ পায় তাহলে সর্বপ্রথম কর্পোরেশনের শূন্যপদ গুলিতে স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগ করা হবে,তার সাথে ১০০ দিনের কাজের সংখ্যা বাড়িয়ে ২০০ দিন করা এবং দৈনিক বেতন ৩২৭ টাকা করা হবে। দলমত নির্বিশেষে মানুষকে পৌর পরিষেবা দেবে বামপন্থীরা।