হকার চারশো চাইবেইআপনার কাজ ওটা দেড়শোতে নামিয়ে আনা”।

ফেসবুকে খুব ভাইরাল হয়েছে। বাস্তবিকই তাই। মোদী বুঝে গেছে দুশো পেরোবে না। উত্তর ভারতে একটাও আসন বাড়ার জায়গা নেই আর; সব আগের ভোটে জিতে রেখেছে। এ বছর অবধারিত কমবে। দক্ষিণ ভারতে অবস্থা আরো খারাপ। তাই বার বার আসছে পূর্ব ভারতে, বিশেষ করে বাংলায়। বাংলার আঠারোটা ওর পক্ষে ধরে রাখা মুশকিল। বাম – কংগ্রেস জোটের ভোট অনেকটা বাড়বে। গতবার যে তৃণমূলবিরোধী ভোট বিজেপিতে গেছিল, তার বড় অংশ জোটে ফিরে আসবেই। তৃণমূলের কিছু পদ্মে যাবে, কিছু বাম- কংগ্রেস জোটে। সব মিলিয়ে ঘোঁট পাকানো অবস্থা।

তবু কিছু অনুমান করা যেতে পারে।

১) বামেদের দুদিকে লাভ হবে। ভোট বাড়বে এবং তারা খালি হাতে ফিরছে না।

২) বিজেপির দুদিকেই ক্ষতি।; ভোট কমছে, আসন কমছে।

৩) তৃণমূলের ভোট কমছে কিন্তু আসনসংখ্যা নির্ভর করবে জোটের আসনপ্রাপ্তির ওপর। বাম – কংগ্রেসের আসন যত  বাড়বে তৃণমূলের আসন তত কমবে। আবার লুঠপাট করে জোটের বেশ কিছু নিশ্চিত আসন ছিনিয়ে সেই সব জায়গায় ওদের দ্বিতীয় করে দিতে পারে। মুর্শিদাবাদ, বহরমপুরে জোট নিশ্চিত জিতছে। যাদবপুর, কলকাতা দক্ষিণ, শ্রীরামপুর, হাওড়া, দমদম, রাণাঘাট, আরামবাগ, কৃষ্ণনগর, রায়গঞ্জ, মালদার দুটো আসন, দার্জিলিং, আসানসোল, জঙ্গীপুরে জোটের ভালো সম্ভাবনা আছে। মারদাঙ্গা করে কিছু বুথ লুঠলেই তৃণমূল নিজের দিকে ফল ঘুরিয়ে দিতে পারে। নির্বাচনের দিনগুলোতে জোট নিজেদের বুথ কতটা আগলাতে পারবে তার ওপর খেলা অনেকটা নির্ভর করছে।

সারা ভারতে বিজেপির বিপুল ধ্বস নামছে। কিন্তু INDIA জোট? অন্তত NDA জোটের চেয়ে বেশি আসন পাবে তারা ; কিন্তু গরিষ্ঠতার চৌকাঠ পেরোনো কঠিন। এখানেই শুরু মমতার খেলা। ও কোনো জোটেই নেই। মমতা বিজেপির স্বাভাবিক মিত্র; কিন্তু ভোটের পর জল মাপবে। তৃণমূলের আসনসংখ‍্যা যদি সরকার গঠনের নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়ায় তাহলে NDA, INDIA সবাই মমতার পায়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে; এবং হাজতে না ঢোকানোর গ‍্যারান্টি, টাকা ইত্যাদি পেলেই তৃণমূল যে কারো শয‍্যাসঙ্গী হয়ে যাবে। সিবিআই, ইডি আবার যোগনিদ্রায় চলে যাবে।

তৃণমূলকে শাস্তি দেওয়ার একমাত্র উপায় বাম- কংগ্রেস জোটকে নিশ্চিতভাবে বাড়িয়ে তৃণমূলের আসন যতটা সম্ভব কমিয়ে দেওয়া। সাধারণ ভোটারদের দায় যেমন আছে, সংগঠনের দায়ও কম নয়। পঞ্চায়েতে যে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল, তার ধার আরো বাড়াতে হবে। তৃণমূলের ওপর নির্ভর করে কেন্দ্রে সরকার তৈরি করে কেউ মমতাকে চটাবে না। পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতির তদন্তের শেষ দেখতে গেলে তৃণমূলকে এমনভাবে হারানো দরকার যেন কেন্দ্রে সরকার গড়তে মমতার সমর্থন অবশ‍্যম্ভাবী না হয়ে ওঠে।