৫০০ দিন পার করে রাস্তায় বসে আছেন শিক্ষক পদপ্রার্থীরা, নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা, গোরুপাচার কান্ডে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতিতে উত্তাল রাজ্য। টলমল অবস্থা শাসক দলের। এহেন ‘মাহেন্দ্রক্ষণে’ আর এস এস-এর ‘মা দুর্গা’ আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্লাবগুলির দুর্গাপুজো অনুদান আরো বাড়িয়ে দিলেন।

তথ্য বলছে বিগত পাঁচ বছরে এই অনুদানের পরিমাণ ২২কোটি ৫৩লক্ষ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫২কোটি টাকা। শতাংশের হিসেবে বৃদ্ধি ১০১৯%। আর অনুদান প্রাপ্ত ক্লাবের সংখ্যাও প্রতি বছর ব্যাঙ লম্ফ দিয়ে বেড়েছে দ্বিগুণ। ভাবা যায়! বলিহারি বুকের পাটা মাননীয়ার! যখন কোটি কোটি টাকার ‘পাবলিক মানি’র দুর্নীতিতে তাঁর দলের দুই ‘কেষ্ট-বিষ্টু’ বিচারাধীন হয়ে জেলে এবং আরো অন্তত আটজন লাইনে, তখন সেই ‘পাবলিক মানি’র দরাজ খয়রাতি প্রদর্শন তথা নয়ছয় তাঁকেই মানায়। কারণ তাঁর সরকারের ‘মিশন’ই যে লুঠতরাজ ও নয়ছয়। তাই অনুদান, খেলা, মেলা তিনি চালিয়ে যাবেন। সে চাকরি প্রার্থীরা যতই রাস্তায় বসুক, একশ দিনের কাজে মজুরি যতই বকেয়া থাক আর ডি এ প্রাপকরা যতই চেঁচাক। পাইয়ে দেওয়ার ‘খেলা’টা তিনি ভালোই বোঝেন। পাইয়ে দিলে সঙ্গে রাখা যায়, মুখও বন্ধ রাখা যায়। এই দুঃসময়ে জনগণকে সঙ্গে রাখা ও তাদের মুখ বন্ধ রাখাটা খুব জরুরি তাঁর কাছে। তাই তিনি বলেছেন অন্যদিকে তাকাবেন না, মা দুর্গার দিকে তাকান আর আনন্দ করুন। জনগণের আনন্দে যদি ওঁদের নিরানন্দ কিছুটা কাটে!


যদিও তথ্য বলছে এ রাজ্যে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা ৪৯ শতাংশ মানুষই পান নি। অর্থাৎ পাইয়ে দেবার খেলাতেও তিনি ফেল মেরেছেন। অর্থনীতির একটা নিজস্ব নিয়ম আছে। পরিকল্পনা বহির্ভূত বেলাগাম ব্যয় দীর্ঘদিন ধরে চললে অর্থনীতি দেউলিয়া হবার পথে হাঁটে। কিন্তু ‘চোরে না শোনে ধর্মের কথা’। আর চোরেদের রানি অর্থনীতির নিয়ম মানবেন কেন? তাই আর এস এস-এর দুর্গার সহায় এখন মা দু্র্গা।


কিন্তু বিধি বাম! ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে এর বিরুদ্ধে উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। দায়ের হয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে দু-দুটি জনস্বার্থ মামলা। কেবলমাত্র প্রতিবারের মতো আর এস এস এই ঘটনায় খুশি আর বিজেপি নিশ্চুপ। ‘মৌনং সম্মতিং লক্ষণং’!