মে দিবসের জন্মভূমি আমেরিকা। কাজের ঘন্টা কমানোর দাবিতে, ৮ ঘন্টা কাজের দাবিতে সংগঠিত ঐতিহাসিক শ্রমিক আন্দোলনের স্মারক মে দিবস। যদিও পরবর্তী দিনগুলিতে মে দিবস হয়ে উঠেছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার উচ্ছেদের অঙ্গীকার দিবস, দুনিয়াজোড়া শোষণের শৃংখল ছেঁড়ার লক্ষ্যে শ্রমিক শ্রেণির সংগ্রামের সংহতি দিবস।

     একটা সময়ে এই দুনিয়ায়  ‘সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত’ কিংবা চোদ্দ-ষোলো-আঠেরো ঘন্টা ছিল শ্রমিকদের কাজের ঘন্টা। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় অধিক উৎপাদন ও অধিক মুনাফার লক্ষ্য সাধনে শ্রমিকদের কাজের ঘন্টার কোনো নির্দিষ্ট সীমা-পরিসীমা ছিল না। ছিল না এই প্রশ্নে কোনো আইন। ১৮২০ থেকে ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কাজের ঘন্টা কমানোর দাবিতে ইউরোপ-আমেরিকা জুড়ে সংঘটিত হয়েছিল অসংখ্য ধর্মঘট। ১৮২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ার মেকানিকদের  ইউনিয়ন ছিল বিশ্বের প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন, যারা দাবি তুলেছিল ১০ ঘন্টা কাজ। ১০ ঘন্টা কাজের দিনের আওয়াজ ক্রমশ ব্যাপক আন্দোলনের চেহারা নিল। কিছু শিল্পে এই দাবি স্বীকৃত হল এবং তার সঙ্গে সঙ্গেই উঠল ৮ ঘন্টা কাজের দাবি।

        ৮ ঘন্টা কাজের দাবিতে আন্দোলন আমেরিকাতে শুরু হলেও অন্যান্য উদীয়মান পুঁজিবাদী দেশেও এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়তে লাগল। এমনকি অস্ট্রেলিয়াতেও! সেখানকার গৃহ নির্মাণ শ্রমিকরা এই আন্দোলনে সামিল হয়েছিল। ১৮৬৬ সালের ২০ আগষ্ট  ৬০টি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বাল্টিমোরে মিলিত হয়ে গড়ে তোলেন জাতীয় লেবার ইউনিয়ন। এই সংগঠনই ৮ ঘন্টা কাজের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলে। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে ১৮৬৪ সালে গড়ে ওঠা শ্রমজীবীদের প্রথম আন্তর্জাতিক সংগঠন বা ‘প্রথম আন্তর্জাতিক’এর লন্ডনের সদর দফতরে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। সরকারি কর্মক্ষেত্রে ৮ ঘন্টা কাজের দাবি মেনে ১৮৬৮ সালে আমেরিকার আইনসভায় আইন পাশ হয়। ১৮৬৬ সালের আগষ্ট মাসে জাতীয় লেবার ইউনিয়ন ৮ ঘন্টা কাজের দিনের প্রস্তাব গ্রহণ করে। ওই বছরই সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম আন্তর্জাতিক ওই দাবির সমর্থনে বিবৃতি প্রকাশ করে। কাজের দিন ৮ ঘন্টার আইন করে বেঁধে দেবার প্রস্তাব উত্থাপিত হয় ১৮৬৬ সালের ৩ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিকের জেনেভা কংগ্রেসে।

      কার্ল মার্কস ক্যাপিটাল গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে ‘কাজের দিন’ অধ্যায়ে ৮ ঘন্টা কাজের আন্দোলনের উল্লেখ করেন এবং নিগ্রো ও শ্বেতাঙ্গ শ্রমিকদের অভিন্ন শ্রেণিস্বার্থের কথা বলেন।

      প্রথম আন্তর্জাতিকের জেনেভা কংগ্রেস ৮ ঘন্টা কাজের দাবিকে সারা দুনিয়ার শ্রমিকদের সাধারণ দাবি হিসেবে গ্রহণ করে। ১৮৭২ সালে প্রথম আন্তর্জাতিকের সদর আমেরিকার নিউইয়র্কে স্থানান্তরিত হয় এবং ১৮৭৬ সালে তা উঠে যায়। সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল তারপরেও ৮ ঘন্টার আন্দোলন থেমে থাকে নি। বরং এগিয়ে চলে।

      ১৮৮৬ সালের ১লা মে ৮ ঘন্টা কাজের দাবিতে আমেরিকার শিকাগো শহরের শ্রমিক ধর্মঘট ও হে মার্কেটের যে ঐতিহাসিক শ্রমিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে মে দিবসের সৃষ্টি, সেই সময় শ্রমজীবীদের কোনো আন্তর্জাতিক সংগঠন  না থাকলেও শ্রমিকদের দুর্বার আন্দোলনের তরঙ্গ  রুধিবে কে? ধর্মঘটের মূল কেন্দ্র শিকাগো হলেও নিউইয়র্ক, বালটিমোর, ওয়াশিংটন, মিলওয়াকী, সিনসিন্নাটি, সেন্ট লুই, পিটসবার্গ,  ডেট্রয় ইত্যাদি শহরেও ধর্মঘট সংঘটিত হয়। এই মহাসংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিল ‘আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার’। ধর্মঘটের বছর ও তার আগের বছরগুলিতে ধর্মঘটের সংখ্যা ও অংশগ্রহণকারী শ্রমিকের সংখ্যার তুলনামূলক চিত্র থেকেই বোঝা যাবে ক্রমান্বয়ে সংগ্রামী শ্রমিকদের জঙ্গী মনোভাব কীভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

            ধর্মঘটের সংখ্যা    ধর্মঘটী শ্রমিক সংখ্যা

১৮৮১ থেকে ১৮৮৪  গড়ে ৫০০- ১ লক্ষ ৫০  হাজার

১৮৮৫     –    ৭০০   – ২লক্ষ ৫০ হাজার

১৮৮৬      –     ১৫৭২    – ৬ লক্ষ

   ১৮৮৬ সালের ১লা মে হে মার্কেটে ধর্মঘটী শ্রমিকদের সুবিশাল সমাবেশ সংগঠিত হল। কিন্তু মালিক ও শিকাগো সরকারের সম্মিলিত উদ্যোগে শ্রমিক অভিযানের গতিরোধ করা হয়। ৩রা মে প্রতিবাদে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে পুলিশ ৬ জন শ্রমিককে হত্যা করে ও অনেককে  আহত করে। পুলিশের এই পাশবিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে ৪ঠা মে হে মার্কেটে আবার শ্রমিক সমাবেশ।পুলিশের ওপর  এসে পড়ল একটি বোমা এবং একজন সার্জেন্ট নিহত হল। নিশ্চিতভাবে কোনো বিশৃখলা সৃষ্টিকারীর কাজ। শ্রমিক-পুলিশ  খণ্ডযুদ্ধে ৭জন পুলিশ ও ৪ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়।ব্যাপক ধরপাকড় চালায় পুলিশ। প্রহসনের বিচারে ফাঁসি হয় অগাস্ট স্পাইজ, অ্যালবার্ট পার্সনস্, অ্যাডল্ফ ফিসার ও জর্জ এঞ্জেলস্ এই চারজন শ্রমিকনেতার। এছাড়া আগে আরো দুইজন  জেলবন্দি শ্রমিক  নেতার ফাঁসি ও আত্মহননে মৃত্যু হয়।

   এই ঐতিহাসিক সংগ্রামের শলাকাকে জ্বালিয়ে রাখতে ও দুনিয়ার সব প্রান্তের শ্রমিকদের মধ্যে এর শিখাকে ছড়িয়ে দিতে ১৮৮৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের প্রথম অধিবশনে এঙ্গেলসের নেতৃত্বে ১লা মে দিনটিকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর পরে ১৮৯৩ সালের ৬ থেকে ১৩ আগষ্ট জুরিখে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের তৃতীয় কংগ্রেসের প্রস্তাবে বলা হয়েছিল যে, মে দিবস হবে শ্রেণিবৈষম্য বিলোপের জন্য শ্রমিকশ্রেণির সুদৃঢ় সংকল্পের অঙ্গীকার।

   মে দিবসের রাজনৈতিক তাৎপর্য অনুধাবন করে মহামতি লেনিন ১৮৯৬ সালে জেলে আটক থাকাকালীন মার্কসীয় রাজনৈতিক সংস্থাগুলির অন্যতম ‘সেন্ট পিটসবার্গ ইউনিয়ন অব স্ট্রাগল ফর লিবারেশন অব দি ওয়ার্কিং ক্লাশ’ নামক সংগঠনের জন্য মে দিবসের ইস্তেহার লেখেন। এই ইস্তেহারের সহজ সরল ভাষা ব্যাপক প্রভাব ফেলে শ্রমিকদের মধ্যে। এরই প্রভাবে এক মাস পরে সুতাকল শ্রমিকদের জঙ্গি ধর্মঘট সংঘটিত হয় সেন্ট পিটসবার্গে। ১৯০০ সালে ‘খারকভে মে দিবস’ পুস্তিকার ভূমিকা লেখেন লেনিন। তাঁর কাছে মে দিবস ছিল ‘রাশিয়ার মানুষের রাজনৈতিক মুক্তির জন্য অপরাজেয় সংগ্রাম ‘ এবং ‘শ্রমিক শ্রেণির শ্রেণিগত অগ্রগতি ও সমাজতন্ত্রের জন্য সরাসরি সংগ্রাম’-এর কেন্দ্রবিন্দু। ৮ ঘন্টা কাজের দাবির সঙ্গে অন্যান্য ছোটোখাটো এবং নিছক অর্থনৈতিক দাবি জুড়ে দেওয়ায় খারকভের নেতাদের সমালোচনা করেছিলেন লেনিন। কারণ মে দিবসের দাবি সমগ্র শ্রমিক শ্রেণির দাবি, এই দাবির লক্ষ্য ব্যক্তিগত কয়েকজন মালিক নয়, লক্ষ্য সরকার, সমগ্র পুঁজিবাদী ব্যবস্থা।

  এবার আসা যাক  ১৯১৪ থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত সংঘটিত  প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন মে দিবস ও সমসাময়িক ঘটনাবলীর কথায়।মহাযুদ্ধের সময়ে সোস্যাল ডেমোক্রেটিক নেতাদের মতাদর্শগত দেউলিয়াপনা ও বিশ্বাসঘাতকতা ১৯১৫ সালের মে দিবসে স্পষ্ট হয়ে উঠল। সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে তাদের মদমত্ত জাত্যাভিমান ও পিতৃভূমি রক্ষার ভ্রান্ত নীতির বিরুদ্ধে স্বয়ং লেনিন ও জার্মানির সংখ্যালঘু কমিউনিস্ট নেতা রোজা লুক্সেমবার্গ, কার্ল লিবনেখ্টের সোচ্চার কন্ঠ ও শাণিত যুক্তি ধ্বনিত হয়েছিল। এর মধ্যেই ১৯১৬ সালের মে দিবসে যুদ্ধরত সব দেশেই আংশিক ধর্মঘট হয় ও খোলাখুলি সংঘর্ষ ঘটে।

এই প্রেক্ষাপটেই একদিকে সোস্যাল ডেমোক্রাটদের দ্বারা লুক্সেমবার্গ,  লিবনেখ্টের হত্যাকাণ্ড, ফ্যাসিস্ট মুসোলিনীর নির্দেশে ইতালির কমিউনিষ্ট নেতা আন্তোনিও গ্রামসির দীর্ঘ কারাবাস যেমন প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণি, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধকে বিপ্লবী গৃহযুদ্ধে পরিণত করার লেনিনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রুশ দেশে প্রথম সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পাদন করেছে সেখানকার শ্রমিক শ্রেণি। যে ঘটনা সারা পৃথিবী জুড়ে পুঁজিবাদের বুকে ভয়ংকর কাঁপন সৃষ্টি করল আর শ্রমিক শ্রেণিকে অভূতপূর্ব বিজয়বোধে উদ্বুদ্ধ করল। এইভাবেই মে দিবস হয়ে উঠল শ্রমিক শ্রেণির আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস এবং পুঁজিবাদী শোষণ ও মজুরি দাসত্ব থেকে মুক্তি ঘোষণার দিন, বিপ্লবের লক্ষ্যে উৎসর্গীকৃত দিন।

আবার প্রতিক্রিয়ার নগ্ন রূপ প্রত্যক্ষ করল বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণি ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত জার্মান ফ্যাসিস্টদের দুনিয়াজোড়া   প্রতিক্রিয়ার দাপটে। ১৯৩০ সাল থেকে সমগ্র দশক জুড়েই মে দিবস ধ্বনিত করল ফ্যাসিস্ট আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আহ্বান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে ফ্যাসিবাদ পরাস্ত হয়েছে। সেও এক ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন শ্রমিক শ্রেণির তথা সমাজতন্ত্রের। কারণ সোভিয়েত ইউনিয়নের মরণপণ প্রতিরোধ ছাড়া মানব সভ্যতার দুষমণ দুর্ধর্ষ হিটলারকে পরাস্ত করা সম্ভব হত না।

       ফ্যাসিস্ট শক্তিকে তখনকার মতো পরাস্ত করা গেলেও নির্মূল করা যায় নি। কেননা যতদিন পুঁজিবাদ থাকবে ততদিন ফ্যাসিবাদের আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা থেকে যাবে। পুঁজিবাদের সবচাইতে আগ্রাসী, হিংস্র রূপ হল ফ্যাসিবাদ। তাই পুঁজিবাদের গভীর সংকটগ্রস্ততায় আবির্ভাব ঘটে ফ্যাসিবাদের। আজকের দুনিয়ায় সংকটগ্রস্ত পুঁজিবাদ মার্কসীয় অর্থনীতির সূত্রের যথার্থতা প্রমাণ করে ক্রমাগত পুঞ্জিভবন ও কেন্দ্রিভবন ঘটিয়ে বিশ্ব লগ্নিপুঁজির বিপুলায়তন চেহারায় আবির্ভূত। এই পুঁজির তীব্র শোষণের অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তোলার স্বার্থেই এসেছে নয়া আর্থিক উদারনীতি।আমরা দেখছি বিশ্বের পুঁজিবাদী দেশগুলিতে অতি দক্ষিণপন্থার চরম রূপ। কোথাও বা দেখছি নব্য ফ্যাসিস্ট শক্তির আত্মপ্রকাশ। পরিণামে তীব্র  থেকে তীব্রতর হচ্ছে শ্রমিক শোষণ, বেকারি, ছাঁটাই, সামাজিক সুরক্ষার ধ্বংস সাধন।  নয়া আর্থিক উদারনীতিতে তীব্রতর হচ্ছে শ্রেণি সংগ্রামও। খোদ আমেরিকা সহ ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, গ্রীস এবং ইউরোপের অপরাপর দেশে বর্তমান সময়কাল জুড়ে সংঘটিত হয়েছে বিভিন্ন শিল্পের শ্রমিকদের বড়ো বড়ো সংগ্রাম ও ধর্মঘট। প্রতিবাদী দেশ শ্রীলঙ্কার কথা আমরা জানি।আমাদের  দেশেও শ্রমিক-কৃষক-কর্মচারিরা সংগঠিত করে চলেছে নয়া উদারনীতি সঞ্জাত শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম।

শ্রমজীবী মানুষের এই সংগ্রামকে দুর্বল করার স্বার্থে বিশ্ব লগ্নিপুঁজির পাহারাদার পুঁজিবাদী শাসকদের আর এক নয়া কৌশল  হচ্ছে জাতি, ধর্ম, বর্ণ,পরিচিতি সত্তার নামে শোষিত মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা। জাতি ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং বর্ণবিদ্বেষী ঘৃণায় আমেরিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং আমাদের দেশের শোষিত মানুষের ঐক্য দুর্বল হচ্ছে। আমাদের দেশে ‘হিন্দুত্ব’র নামে চলছে শ্রমিক শ্রেণির ঐক্যকে ভেঙ্গে ফেলার চক্রান্ত। মনে রাখতে হবে ‘হিন্দুত্ব’ আর হিন্দুধর্ম  এক নয়। ‘হিন্দুত্ব’ একটি হিংস্র, আগ্রাসী, সাম্প্রদায়িক মতবাদ। হিন্দুধর্মের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। হিন্দুধর্মে একথা বলা নেই যে, নিজের ধর্মকে ভালোবাসতে হলে অন্য ধর্মকে ঘৃণা করতে হবে বা অন্য ধর্মাবলম্বীকে আক্রমণ করতে হবে। বিবেকানন্দের কোনো লেখা বা ভাষণে এইরকম কোনো কথা লেখা আছে কিনা দেখাতে পারবেন হিন্দুত্ববাদী আর এস এস ও বি জে পি-র নেতারা

   ইতিহাসে মে দিবসের সৃষ্টি পুঁজিবাদী শোষণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক সংগ্রামকে ঘিরে। পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক অর্থনৈতিক বাস্তবতায় মে দিবস এসেছে নতুন নতুন প্রেক্ষিত নিয়ে। কিন্ত পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রেক্ষিতটি রয়ে গেছে অপরিবর্তিত। বর্তমান সময়ে নয়া আর্থিক উদারনীতি সহ অতি দক্ষিণপন্থার রাজনীতি ও বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় শ্রেণি ঐক্য ও তীব্র শ্রেণি সংগ্রামের আহ্বান নিয়ে সামনে এসেছে এবারের পয়লা মে।