উনবিংশ শতাব্দীর শেষ লগ্ন। আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় ফরাসি, রুশ ও জার্মান সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নাজেহাল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য। নিমজ্জিত গভীর সংকটে। তাই ভারতের মতো উপনিবেশে আরো কঠোরভাবে সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য কায়েম করতে হবে। ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সব থেকে বড়ো প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলা প্রদেশকে বিভাজন করতে হবে—দ্বিখন্ডিত করতে হবে বাঙালির প্রতিবাদী মেজাজকে। তাই এল বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব। হেতু হিসাবে সামনে রাখা হল প্রশাসনিক প্রয়োজনকে। কারণ ১৮৬৬ সালে উড়িষ্যার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের দিনগুলিতে বিশালায়তন বাংলা প্রদেশে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ও ব্যবস্থা গ্রহণে বিশেষ সমস্যা অনুভূত হয়। তাই প্রশাসনিক সুবিধার্থে বাংলাকে বিভক্ত করে প্রদেশগুলির পুনর্গঠন ও সীমান্তের পুনর্বিন্যাসের পরিকল্পনার কথা বলা হয়।

কিন্তু ১৯০৩ সালের শেষ লগ্ন থেকে ১৯০৫ সালের অক্টোবর মাসে বঙ্গভঙ্গের চূড়ান্ত রূপায়ণের মধ্যবর্তী সময়ে ব্রিটিশদের পরিকল্পনায় কার্যত বাংলা ব্যবচ্ছেদের পরিষ্কার চিত্রটি ফুটে ওঠে এবং প্রশাসনিক প্রয়োজনানুগ নীতির মৌলিক পরিবর্তন ঘটে যায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত স্বার্থচিন্তায়। চিন্তা ও চেতনায় অগ্রসর বাঙালি জাতিসত্তাকে দুর্বল করার লক্ষ্যেই  পুনর্গঠিত ও পুনর্বিন্যস্ত হয় নতুন প্রদেশের সীমানা ও জনবিন্যাস। নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের জনসংখ্যা হল ৩ কোটি ১০ লক্ষ। যার মধ্যে মুসলমান সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ ও হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্তদের সংখ্যা দাঁড়ায় ১ কোটি ২০ লক্ষ। এইভাবে বাঙালি  হিন্দু সম্প্রদায় সংখ্যালঘুতে পরিণত হল। ঘটল সাম্প্রদায়িক বিভাজন। অপরদিকে বিহার ও উড়িষ্যা নিয়ে গঠিত অবশিষ্ট বঙ্গ প্রদেশে মোট ৫ কোটি ৪০ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে বাংলাভাষী ১ কোটি ৭০ লক্ষ বাঙালি ৩ কোটি ৭০ লক্ষ হিন্দি ও ওড়িয়া ভাষাভাষী জনগণের সম্মুখে  ভাষাগত সংখ্যালঘিষ্ঠ হয়ে পড়লেন। এইভাবে দ্বিখন্ডিত হয়ে পড়ল সমগ্র বাঙালি জাতিই।           

বঙ্গভঙ্গের সঙ্গে সাধারণত তৎকালীন গভর্নর জেনারেল কার্জনের নাম বিশেষভাবে আলোচিত হয়। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এই বিভাজন তথা হিন্দু-মুসলিম অনৈক্য সৃষ্টির সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনার সঙ্গে আরও দুইজন ব্রিটিশ রাজ কর্মচারীর নাম বিশেষভাবে যুক্ত। যাঁদের একজন হলেন তৎকালীন বাংলার গভর্নর এন্ড্রু ফ্রেজার এবং অপরজন হলেন স্বরাষ্ট্র সচিব রিসলে। বঙ্গভঙ্গ বিষয়ে ফ্রেজার ছিলেন কার্জনের প্রধান উপদেষ্টা এবং তাঁরই প্রস্তাব অনুযায়ী বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনাটি ১৯০৩ সালে ‘রিসলে নোট’ বা ‘রিসলে পত্র’ নামে প্রকাশিত হয় ও ভারত সচিবের অনুমোদন লাভ করে। বিশাল প্রদেশ হিসাবে  বাংলার শাসন পরিচালনার অসুবিধার কথা গণনায় রেখে যদি বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব গৃহীত হয়ে থাকত তবে ওড়িয়াভাষী উড়িষ্যা ও হিন্দিভাষী বিহারকে বাংলা থেকে পৃথক করে বাংলাভাষী মানুষদের একটি প্রদেশের মধ্যে রাখাই যুক্তিযুক্ত হত। কিন্তু তা হল না। সুতরাং শাসনতান্ত্রিক ও প্রশাসনিক অজুহাতের আড়ালে বঙ্গভঙ্গের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক। ১৯০৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একটি সরকারি প্রতিবেদনে প্রকাশিত রিসলের মন্তব্য থেকেও তার প্রমাণ মেলে—‘Bengal united is a Power, Bengal divided will  pull several different ways. That is perfectly true and is one of the merits of the scheme.’ এছাড়াও  ১৯০৪ সালের ডিসেম্বরে  রিসলের অপর একটি মন্তব্যের অংশবিশেষও বিশেষ প্রণিধানযোগ্য—‘One of our main objects is to split up and thereby to weaken a solid body of components of our rule.’ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্যই যে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনার প্রয়োজন হয়েছিল সেকথা পরবর্তী গভর্নর জেনারেল  মিন্টোও স্বীকার করেছিলেন। ১৯০৬ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি ভারত সচিব মর্লিকে একটি চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন যে, বাঙালিদের রাজনৈতিক বিক্ষোভ ক্রমশ গুরুতর উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে উঠছে। এই অদ্ভুত মেধা ও ধীশক্তির অধিকারী  বাঙালিরা ভারতের আর পাঁচটা জাতির মতো নয়। এদের জনমত গঠনের রাজনৈতিক ক্ষমতা ভয়ংকর। তাই তিনি অভিমত পোষণ করেছেন—‘From a political point of view alone, putting aside the  administrative difficulties of the old province, I believe partition to have been very necessary.’ পরবর্তী সময়ে লর্ড হার্ডিঞ্জও স্বীকার করেছিলেন—‘The desire to aim a blow of the Bengal is overcame other considerations.’              ১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর বঙ্গভঙ্গ আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্যকরী হয় এবং সঙ্গে সঙ্গেই সারা বাংলা প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে। দিনটি প্রতিপালিত হয়েছিল জাতীয় শোকদিবস হিসাবে। সারা দেশ জুড়ে ডাক দেওয়া হল হরতাল ও ধর্মঘটের। সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক হিসাবে ও হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের নিদর্শন হিসাবে রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে ওই দিনেই সূচিত হল রাখি বন্ধন। তিনি লিখলেন একাধিক স্বদেশী গান। আর রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী লিখলেন ‘বঙ্গলক্ষ্মীর ব্রতকথা’। তিনি বঙ্গভঙ্গের দিন অরন্ধন পালনের আহ্বান জানালেন। সধারণ মানুষ ওইদিন অনশন পালন করে খালি পায়ে ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনি দিতে দিতে ও দেশাত্মবোধক গান গাইতে গাইতে শহর কলকাতার পথ-প্রান্তর পরিক্রমা করল। বিকালে অনুষ্ঠিত হল  দুটি বিশাল জনসভা। সে দুটিতে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী ভাষণ দিলেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু প্রমুখ। পূর্ববঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকাসহ জেলায় জেলায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। কার্জনের ভাবনা ছিল এই আন্দোলন হবে ক্ষণস্থায়ী। কিন্তু অচিরেই তিনি বুঝতে পারলেন যে, তাঁর অনুমান ভুল। বঙ্গভঙ্গ বাঙালিকে বিভক্ত করার পরিবর্তে  ঐক্যবদ্ধ করে দিল। 

  বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের আবহে সর্বপ্রথম স্বরাজের দাবি উত্থাপিত হয়। ‘স্বরাজ’ অর্থাৎ বিদেশী শাসনের পূর্ণ অবসানের দাবি। এই দাবির কথা তুলে ধরলেন বিপিনচন্দ্র পাল তাঁর ‘দি নিউ ইন্ডিয়া’ পত্রিকায়, অরবিন্দ ঘোষ ‘বন্দেমাতরম’-এ এবং ব্রহ্ম বান্ধব উপাধ্যায় ‘যুগান্তর’ ও ‘সন্ধ্যা’ পত্রিকায়। ১৯০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিপিনচন্দ্র পাল নির্ভীক দৃঢ়তায় লিখেছিলেন—‘Our ideal is full freedom’ , এর পরে ১৯২১ সালে জাতীয় কংগ্রেসের আমেদাবাদ অধিবেশনে প্রথম কমিউনিস্টদের পক্ষ থেকে পূর্ণ স্বরাজের দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপিত হয়। প্রাচ্যবিদ উইল ডুরান্ট স্বদেশী আন্দোলন বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন—‘It was in 1905, then; that the Indian Revolution began.’   বঙ্গভঙ্গের দিনটিতে রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে রাখি বন্ধন  জনমানসে সুগভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়। সেদিন সকালে তাঁর নেতৃত্বে কলকাতার রাজপথে রাখিবন্ধনের শোভাযাত্রা ও গঙ্গাস্নানের বিবরণ পাওয়া যায় অবনীন্দ্রনাথের বর্ণনা থেকে—‘ঠিক হল সকালবেলা সবাই গঙ্গাস্নান করে সবার হাতে রাখি পরাব। এই সামনেই জগন্নাথ ঘাট, সেখানে যাব—রবিকাকা বললেন, সবাই হেঁটে যাব, গাড়িঘোড়া নয়।—–রওনা হলুম সবাই গঙ্গাস্নানের উদ্দেশ্যে। রাস্তার দুধারে বাড়ির ছাদ থেকে আরম্ভ করে ফুটপাত অবধি লোক দাঁড়িয়ে আছে—মেয়েরা খই ছড়াচ্ছে, শাঁখ বাজাচ্ছে, মহা ধুমধাম—যেন একটা শোভাযাত্রা, দিনুও  সঙ্গে ছিল, গান গাইতে গাইতে রাস্তা দিয়ে মিছিল চলল—‘বাংলার মাটি, বাংলার জলবাংলার বায়ু, বাংলার ফলপুণ্য হউক পুণ্য হউক পুণ্য হউক                              হে ভগবান।।’অবনীন্দ্রনাথ এও জানিয়েছেন যে, এরপর আবার রবীন্দ্রনাথ পাথূরিয়াঘাটের মুসলমান সহিসদের এবং চিৎপূরের বড়ো মসজিদে গিয়ে মোল্লা মৌলভীদের রাখি পরান।               

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথের সক্রিয়তার সবচেয়ে বড়ো পরিচয়  অমূল্য সম্পদসম এক একটি গান  রচনা—‘ওদের বাঁধন যতই শক্ত হবে মোদের বাঁধন টূটবে’, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’, ‘ও আমার দেশের মাটি, তোমার ‘পরে ঠেকাই মাথা’, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে’, ‘যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক, আমি তোমায় ছাড়ব না মা’, ‘ছি ছি চোখের জলে ভেজাস নে আর মাটি’, ‘আমাদের যাত্রা হল শুরু এখন ওগো কর্ণধার/তোমারে করি নমস্কার’ ইত্যাদি আরও অনেক গান।               

যদিও রবীন্দ্রনাথ এই আন্দোলনের সঙ্গে সাকুল্যে মাত্র তিনমাস যুক্ত থাকতে পেরেছিলেন। কারণ তিনি তাঁর স্বল্প সময়ের অভিজ্ঞতায় একথা বুঝতে পেরেছিলেন এই মধ্যবিত্ত স্বার্থ সর্বস্ব আন্দোলনের সীমাবদ্ধতা। তিনি অতি তরুণ বয়স থেকেই গোখলে প্রমুখ নরমপন্থী কংগ্রসী নেতাদের আবেদন নিবেদনের রাজনীতিকে ধিক্কার জানিয়ে এসেছেন। এছাড়া চরমপন্থী ভাবধারা ও কংগ্রেস বহির্ভূত সন্ত্রাসবাদী তথা বিপ্লববাদী ভাবধারার কোনোটিকেই তিনি গ্রহণযোগ্য মনে করেন নি। কেননা প্রথম দুটির মধ্যে তিনি ‘মধ্যবিত্তের আত্মস্বার্থের খেলা’ এবং তৃতীয়টির মধ্যে তিনি ‘মধ্যবিত্ত তরুণদের আত্মঘাতী উন্মাদনা’ দেখতে পেয়েছিলেন।             

রবীন্দ্রনাথ দেশের কাজ করার পথ ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুচিন্তিত ভাবনার প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন ১৯০৪ সালে রচিত ‘স্বদেশী সমাজ’ প্রবন্ধে। তাঁর স্বদেশ চিন্তার সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত হয়ে আছে তাঁর রাজনীতিচিন্তা, ইতিহাসচিন্তা ও পল্লীচিন্তা। গণমনসে যথার্থ শিক্ষা অর্থাৎ সুচেতনা সঞ্চারই ছিল তাঁর অন্যতম প্রধান কর্মোদ্যোগ। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তিতে। এই আত্মশক্তির স্ফূরণ না ঘটিয়ে বাইরের উত্তেজনা সৃষ্টিতে সাময়িক লাভ হলেও শেষ পর্যন্ত সে উত্তেজনায় কোনো স্থায়ী ফল ফলে না—এই ছিল তাঁর বিশ্বাস। তাই বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের দুই উপাদান বয়কট ও স্বদেশী আন্দোলনের বহিরঙ্গ উচ্ছ্বাস ও উত্তেজনবহুল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া তাঁর পক্ষে অসাধ্য হয়ে উঠেছিল। সে অন্য অধ্যায়, অন্য আলোচনা।               

কার্জন পরিকল্পিত বঙ্গভঙ্গই ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের বীজ রোপন করেছিল একথা সত্য। ছাত্র,শিক্ষক,মধ্যবিত্তদের ব্যাপক অংশগ্রহণ এই আন্দোলনকে ব্যাপকতর রূপ দিয়েছিল। ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্রিটিশের জারি করা কার্লাইল সার্কুলারের বিরূদ্ধে ‘আ্যন্টি সার্কুলার সোসাইটি’র আন্দোলনের কথা  এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। সর্বোপরি রবীন্দ্রনাথের রাখি বন্ধন আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে একে এক বাড়তি মাত্রা প্রদান করেছিল। তাই কার্জনের পূর্ববঙ্গ সফর ও সেখানে প্রদত্ত ভাষণে, ঐতিহাসিক সুমিত সরকারের ভাষায় যা এইরূপ—”They would invest the Mohammedans in Eastern Bengal with a unity which they not enjoyed since the days of the old Musalman Viceroys and kings.”— মুসলিম জনমত বঙ্গভঙ্গের পক্ষে পরিবর্তিত হয়ে গেলেও শেষ বিচারে ১৯১১ সালের ২২শে ডিসেম্বর  বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হন ইংল্যান্ডের রাজা ও রানি। কারণ তৎকালীন ভারত সচিব লর্ড ক্রিউ  ১৯১১ সালের ২৪শে জুন ইংল্যান্ডের রাজাকে এক চিঠিতে লিখেছিলেন—‘until we get rid of the partition ulcer, we have no place in Bengal.’                তখনকার মতো বঙ্গবিভাগ রুখে দেওয়া গেলেও স্বার্থান্বেষী রাজনীতির জটিল আবর্তে ১৯৪৭-এ আমাদের স্বাধীনতা লাভ করতে হয়েছে দেশবিভাগ ও বঙ্গবিভাগ মেনে নিয়েই। আমাদের প্রিয় দেশ ও রাজ্যকে আজও প্রতিদিন সম্প্রদায়গত ও ভাষাগত ব্যবচ্ছেদের খড়্গ-কৃপাণের মুখোমুখি হয়ে চলতে হচ্ছে। ব্যবচ্ছেদের ষড়যন্ত্রীরা ঘৃণা ও ধিক্কারের পরিবর্তে পাচ্ছে আস্কারা আর বীরের সম্মান। সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে তাদের প্রতি চলছে সীমাহীন তোষণ। আসুন, রবীন্দ্র আদর্শ পাথেয় করে শপথ গ্রহণ করি বাংলাকে আর ভাগ হতে দেব না। জাতি-উপজাতি ও বিভিন্ন ধর্ম-সম্প্রদায়-ভাষাভাষী মানুষের ঐক্য দীর্ঘজীবী হোক।