ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে নারীশক্তি বরাবরই ব্রাত্য। যদিও মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদর, কল্পনা দত্ত – এনাদের নাম মাঝে মাঝে আমাদের কাছে ভেসে এলেও, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে যখন বিভিন্ন নিবন্ধ লেখা হয়, বা আলোচনা সংঘটিত হয়, তখন নারী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম উচ্চারিত হয় অনেক কম সংখ্যকবার। অবশ্যই অষ্টাদশ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীতে মেয়েদের সামাজিক অবস্থানের কারণেই ঘর থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন কার্যকলাপে অংশগ্রহণ স্বাভাবিক ছিল না। তবে এই সীমাবদ্ধতা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছিল সমাজের ওপরতলায় অবস্থানকারী মেয়েদের ক্ষেত্রে। দরিদ্র, দলিত শ্রেণীর মেয়েরা, যাদের কায়িক শ্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হত, তাদের পক্ষে বাইরের কাজে অংশ গ্রহণ করা সম্ভব হত। যদিও আবার সামাজিক কারণেই এই অংশের মানুষ, অন্তত বিংশ শতাব্দীর প্রথম দুই দশক পর্যন্ত স্বাধীনতা সংগ্রামে সেইভাবে অংশ নিতে পারেননি। কিন্তু সাঁওতাল বিদ্রোহকে আমরা যদি প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম ধরি, তাহলে দেখব সেদিনের ব্রিটিশ বিরোধী লড়াইতে সিধু, কানহো মুর্মুর সঙ্গে একই সারিতে ছিল তাদের দুই বোন ফুলো আর ঝানো যাদের নাম আমরা খুব কমই শুনতে পাই।

সাঁওতাল বিদ্রোহের দুবছরের মধ্যে সিপাহী বিদ্রোহ সংঘটিত হয় – এবং এই সিপাহী বিদ্রোহের পুরোভাগে ছিলেন ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মীবাঈ। তবে রাণীর আসন থেকে সিপাহী বিদ্রোহে তিনি যে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন – তা ছিল অভিজাত শ্রেণীর জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে অংশগ্রহণ। এর আগে এবং পরে বেশ কিছু রাজপরিবারের মহিলা সদস্যরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইএ নেমেছিলেন ব্রিটিশদের হাত থেকে রাজত্ব বাঁচানোর তাগিদে।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকে মেয়েরা শিক্ষার আলোকে আলোকিত হতে থাকে। অভিজাত শ্রেণীর বাইরের মেয়েরাও শিক্ষার সুযোগ পেয়ে সমাজ এবং দেশকে চিনতে শেখে। ফলে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ধারা প্রবেশ করে অন্দরমহলেও। আবার ঘর থেকে বেরিয়ে এসেও মেয়েরা নানারকম সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশীদার হতে শুরু করে। ১৮৮৫ সালে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন এক ভিন্ন গতি পেলেও এই পর্যায়ে মহিলাদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে ইতিহাসবিদরা প্রায় নীরব। যদিও ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং অন্যান্য মনীষীদের বিভিন্ন সমাজ সংস্কারমূলক কাজের সাথে সাথে যে নারীমুক্তির আন্দোলনের বীজবপন হয়েছিল – তার থেকেই ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ভেতরেই জেগে উঠতে থাকে আর এক নতুন আন্দোলন – নারী মুক্তি, নারীর ক্ষমতায়নের আন্দোলন। এইসময়েই বাংলার নিরুপমা দেবী, অনুরূপা দেবী, মহারাষ্ট্রের কাশিবাঈ কানিতকরের লেখনীতে রচিত হতে থাকে নারীর নিজস্ব এবং একান্ত কাহিনীগুলি; কাদম্বিনী গাঙ্গুলি, আনন্দীবাঈ যোশীরা চিকিৎসাবিদ্যা আয়ত্ত করেন বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়া মেয়েদের বাঁচিয়ে তোলার জন্য; আলোকপ্রাপ্তা মহিলারা, যেমন ঠাকুর পরিবারের স্বর্ণকুমারী দেবী, পুনের পণ্ডিতা রমাবাঈ সরস্বতী নারী সমিতি গড়ে তোলেন, বিভিন্ন প্রকাশ্য সমাবেশে নানারকম বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখা শুরু করেন  — অর্থাৎ বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্মে নারীর অংশগ্রহণ স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। মহিলাদের এই সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ তাদের উৎসাহিত করে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনেও  স্বতঃপ্রণোদিত অংশগ্রহণ করতে। প্রথমদিকে স্থাপিত হওয়া নারীসমিতি গুলি শিক্ষা এবং কর্ম সংস্থানের বিষয়গুলির দিকে নজর দিলেও বিংশ শতাব্দীর একদম শুরুতে সরলা দেবী চৌধুরাণীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে প্রথম সারা ভারত ব্যাপী নারীদের জন্য সমিতি – ভারত স্ত্রী মহামণ্ডল। এই সমিতির মূল উদ্দেশ্য হয়ে ওঠে ভারতীয় মহিলাদের মনে স্বাধিকার এবং গণতান্ত্রিক চেতনা সঞ্চার করা।

ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের ১৯৮৯-এর অধিবেশন থেকেই মহিলা প্রতিনিধিরা যোগদান করেন। তবে এই প্রতিনিধিরা মূলতঃ উচ্চবিত্ত, আলোকপ্রাপ্ত পরিবার, বিশেষতঃ ব্রাহ্ম সমাজ বা ক্রিশ্চিয়ান, পার্সি পরিবারের সদস্য ছিলেন। ১৯০৪ সালে সরোজিনী নাইডু কংগ্রেসের সভায় কবিতা পাঠ করতে আমন্ত্রিত হন এবং তাঁর জোরাল বক্তব্যের মাধ্যমে কংগ্রেস নেতৃত্বকে মুগ্ধ করেন। কিন্তু এ পর্যন্ত মহিলাদের ভূমিকা ছিল মোটামুটি স্তিমিত এবং স্বল্প সংখ্যক মহিলাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ যাঁরা সমগ্র দেশবাসীর প্রতিনিধি হয়ে উঠতে পারেননি। কংগ্রেসে যোগদানকারী পুরুষ সদস্যাদের স্ত্রী এবং পরিবারের অন্য সদস্যারাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে কগ্রেসের অধিবেশনগুলিতে যোগ দিতেন।

যদিও মহারাষ্ট্রে সাবিত্রীবাঈ ফুলের নেতৃত্বে আর এক আন্দোলনের সূচনা ঘটেছিল – দলিত, পিছিয়ে থাকা পরিবারের মহিলাদের শিক্ষিত করা এবং বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে তাদের রুখে দাঁড়ানোর জন্য আত্মমর্যাদা জাগ্রত করা।

কিন্তু ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন বাংলায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে নতুন জোয়ার নিয়ে এল। শুধু শিক্ষিত, উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মহিলারা নন, সাধারণ ঘরের গৃহবধূদের কাছেও পৌঁছে গেল এই আন্দোলনের জোয়ার। বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলনের স্রোত সমাজের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাকে ভেঙ্গে সর্বস্তরের মানুষকে এক পথে নিয়ে এল। মুকুন্দদাসের রচিত নাটক ও গানে মেতে উঠল বাংলার গ্রাম। গ্রামের অশিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত গৃহবধূরা তাদের গায়ের সোনার গয়না খুলে সঁপে দিল স্বদেশী আন্দোলনের জন্য।

১৯০৫ সাল থেকেই কংগ্রেসের নরমপন্থা বাংলায় জন্ম দেয় ইংরাজ শাসনের বিরুদ্ধে একটি অন্য ধারার লড়াই – সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের। এই সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনেও মেয়েদের অংশগ্রহণ ছিল গুরুত্বপূর্ণ – যদিও বেশিরভাগ মেয়েদের অবদানই হারিয়ে গেছে বিস্মৃতির অতলে। ১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার অভিযানে পুরোভাগে ছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদর, কল্পনা দত্ত। বিপ্লবী আন্দোলনে আরও বিভিন্ন ভাবে যুক্ত হয়েছিলেন শান্তি ঘোষ, সুনীতি চৌধুরী, বীণা দাস, শান্তিসুধা ঘোষ, সুহাসিনী গাঙ্গুলি, লতিকা সেন, কমলা দাশগুপ্ত, কমলা চ্যাটার্জীর মত অসংখ্য মহিলা। এই বিপ্লবী নারীরা সেই সময়ের বিভিন্ন সামাজিক বন্ধনকে অতিক্রম করে পুরুষ বিপ্লবীদের পাশে থেকে লড়াই করে গেছেন এবং বহু আত্মত্যাগের নমুনা রেখেছেন যা মনে করলেও আমরা শিহরিত হই।

১৯২০-২১ সালে অসহযোগ আন্দোলন যখন শুরু হয় তখনও মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল ব্যাপক। বিশেষ করে বিদেশী পণ্য বর্জনে তাঁদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন পুরোভাগে। মুকুন্দদাসের “ভেঙ্গে ফেল রেশমী চুড়ি বঙ্গনারী, কভু হাতে আর পোরো না” – এই গানে সাড়া দিয়েছিলেন গ্রাম, গ্রামান্তরের বহু মহিলা। পরবর্তী কালে ১৯৩০-৩১ সালে দ্বিতীয় আইন অমান্য আন্দোলন ও ১৯৪২ এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনেও মহিলাদের এই অগ্রগণ্য ভূমিকা আমরা দেখতে পাই। এই ৪২-এর আন্দোলনেই মেদিনীপুরে শহীদ হন মাতঙ্গিনী হাজরা।

যদিও পরাধীন ভারতে কংগ্রেসের নেতৃত্বে খুব কম মহিলাকেই দেখা গেছে, ১৯২৫ সালে সরোজিনী নাইডু জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রী নির্বাচিত হন। তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি সভানেত্রীর পদ অলংকৃত করেছিলেন। তাঁর আগে অবশ্য জন্মসূত্রে আইরিশ আনি বেসান্ত ১৯১৭ সালে কংগ্রেসের সভানেত্রী হন। স্বাধীনতার আগে এই দুজন ছাড়া তৃতীয় মহিলা সভানেত্রী হয়েছিলেন নেলী সেনগুপ্ত। অর্থাৎ স্বাধীনতা সংগ্রামে পুরোদস্তুর অংশগ্রহণ করলেও নেতৃত্বে তাঁরা সেইভাবে জায়গা পাননি।      

ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম দিকে ব্রিটিশ রাজের প্রতি নরমপন্থী মনোভাব বাংলা এবং দেশের অন্য অঞ্চলে জন্ম দেয় সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের। কিন্তু কংগ্রেসের মধ্যেও একই সময়কালে তৈরী হয়েছিল চরমপন্থী নেতৃত্ব যা পরবর্তীকালে কংগ্রেস পরিচালিত স্বাধীনতা আন্দোলনের পুরোভাগে থাকেন। এই সময়েই কিন্তু জাতীয় কংগ্রেস এবং সশস্ত্র বিপ্লব – এই দুই ধারার বাইরে আর একটি তৃতীয় ধারার আন্দোলন তৈরী হয় যা হল কম্যুনিস্টদের অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ গণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের পথ তৈরী করা। ভারতের কম্যুনিস্ট পার্টি তৈরী হয় ১৯২০ সালে তাসখন্দে। তবে তাসখন্দে পার্টি তৈরী হলেও অচিরেই ভারতে ছড়িয়ে পড়ে তাদের কার্যকলাপ। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে যে সমস্ত বিপ্লবীরা আন্দামান সেলুলার জেলে নির্বাসিত হন বা ভারতের মূল ভুখণ্ডেই কারাবদ্ধ হন তাঁরা অনেকেই জেলে বন্দী থাকাকালীন কম্যুনিস্ট আদর্শে অনুপ্রাণিত হন এবং পরবর্তীকালে কম্যুনিস্ট পার্টির সদস্য হন। এঁদের মধ্যে ছিলেন কল্পনা দত্তর মত সাহসী মহিলারাও।  

কম্যুনিস্ট মতাদর্শ দেশপ্রেমী যুবসমাজের মধ্যে যখন ছড়িয়ে পড়তে থাকে, তখন প্রথমে ১৯৩৬ সালে কম্যুনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ছাত্র সংগঠন। এই ছাত্র সংগঠন ছাত্রদের কাছে দেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন যেমন পৌঁছে দিত, তেমনি স্বপ্ন দেখাত সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার। এইসময়ে মেয়েরা আর ঘরে বন্দী নয়, দলে দলে স্কুলে কলেজে লেখাপড়া শিখতে যাচ্ছে। ফলে ছাত্রদের সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রীরাও স্বাধীনতা আর সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে এল। পরে একটি আলাদা ছাত্রী সংগঠনও তৈরী হল। ছাত্রীদের একটা পৃথক সম্মেলন হল লক্ষনৌতে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনেও কম্যুনিস্টরা মূল ধারার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছিল – যার একটা উদাহরণ হল কংগ্রেসের সঙ্গে একজোটে বন্দীমুক্তি আন্দোলনে অংশ নেওয়া। শ্রমিক এবং কৃষককে সংগঠিত করার কাজও কম্যুনিস্ট পার্টি চালিয়ে যেতে থাকে কখনো প্রকাশ্যে আবার কখনো আন্ডারগ্রাউণ্ডে থেকে। মহিলা সমিতি গড়ে তোলার জন্যও কম্যুনিস্ট পার্টির সদস্যরা কাজ করতে থাকেন – এঁদের মধ্যে ছিলেন লতিকা সেন, মণিকুন্তলা সেন ইত্যাদি। ১৯৪৩-এর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সময় মহিলারাই এগিয়ে এসে প্রথমে আইনসভা ঘেরাও করেন এবং তারপর ফজলুল হকের নেতৃত্বাধীন সরকারকে বাধ্য করেন সারা কলকাতা জুড়ে ১৬টি ন্যায্যমূল্যের চালের দোকান এবং সরকারি খরচে ক্যান্টিন তৈরী করতে। পরে এই ন্যায্যমূল্যের দোকান থেকেই স্বাধীন দেশে গড়ে ওঠে রেশন দোকান। কংগ্রেস মহিলারা সেদিন এই আন্দোলনে অংশ নেননি। আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন গরীব কৃষক মহিলারা। দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে কলকাতা জুড়ে কম্যুনিস্ট পার্টির সদস্যরা ও বামপন্থী মহিলারা সেবামূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন। এলা রিড, মণিকুন্তলা সেন, জ্যোতির্ময়ী গাঙ্গুলি, রেণুকা চক্রবর্তী, সুধা রায়, কনক দাশগুপ্তদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে “মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি”। এই সমিতির সঙ্গে যুক্ত হন ইন্দিরা দেবীচৌধুরাণী, নেলী সেনগুপ্ত, রাণী মহলানবীশএর মত খ্যাতিসম্পন্না মহিলারাও। কিছুদিন বাদে এই সমিতি তাদের মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করে যাতে লেখিকা হিসাবে থাকেন আশাপূর্ণা দেবী, আশা গাঙ্গুলী, মীরা দেবী, মৈত্রেয়ী দেবীর মত নামকরা লেখিকারা।

কম্যুনিস্ট পার্টির উদ্যোগে যে আন্দোলন গড়ে ওঠে তা ছিল শুধুমাত্র দেশ নামক ভুখণ্ডের স্বাধীনতা নয়, তা ছিল সামগ্রিক ভাবে দেশের মানুষের স্বাধীনতা অর্জন। স্বাধীন দেশে শ্রেণীবিভক্ত সমাজ নয়, শ্রেণীহীন সমাজ গড়ে তোলাই ছিল  লক্ষ্য। তাই জাতীয়তাবাদী দলগুলি, যাদের পরিচালনায় ছিল ভারতের সামন্ততান্ত্রিক ও বুর্জোয়া শ্রেণী, তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে সংঘাত লাগে কম্যুনিস্ট পার্টির নেতৃত্বের। যদিও আবার ৪২ থেকে উত্তাল স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ে কখনো কখনো কংগ্রেসের নেতৃত্ব এবং কম্যুনিস্ট পার্টি একসঙ্গেই আন্দোলনের শরিক হন। তার মধ্যে কম্যুনিস্ট পার্টির মহিলা সদস্যদের অবদান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।