শ্রমিক শ্রেণী এবং রাষ্ট্রের পাহারাদার পুলিশের সঙ্গে সম্পর্ক বরাবরই সংঘাতের। কেননা পুঁজিবাদীদের দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্র সবসময়ই পুঁজির দালাল মালিকের পক্ষ নিয়ে শ্রমিকের ন্যায্য দাবির পক্ষে সংগঠিত আন্দোলন দমনে তৎপর হয়।রাষ্ট্রের বেতনভুক বাহিনীর সদস্য হিসেবে পুলিশ এ কাজ করে।     শুধুমাত্র রাষ্ট্রের নির্দেশে শ্রমিক শ্রেণীর আন্দোলন দমন করবার মধ্যেই পুলিশ নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখে না।শ্রমিকদের থেকে একেবারে পেশাদার তোলাবাজদের কায়দায় তোলাবাজি ও চালায়।পুলিশের এই তোলাবাজির শিকার বর্তমান সময়ে সবথেকে বেশি হচ্ছে পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা।ট্রাক,ট্যাক্সি ,ওলা,উবের ,বাস,লরি সমস্ত কিছুর থেকেই টাকা চাই। আর তা না দিতে পারলেই কেস ,মারধর সব কিছুই চলে।     কিন্ত সবাই তো এই অত্যাচার নীরবে সহ্য করে না।সংগঠিত হয় পুলিশের জুলুমের বিরুদ্ধে শ্রমিকশ্রেণীর প্রতিবাদ। সম্প্রতি এমনই এক প্রতিবাদের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ওলা উবের চালকেরা।গত  ৭ ইসেপ্টেম্বর  হাওড়া ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তায় কলকাতা ওলা উবের অ্যাপ ক্যাব অপোরেটার এন্ড ড্রাইভারস ইউনিয়ন  (সিটু)- র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মহ: মনু সহ আরো চার জন কমরেডের উপর পুলিশ নৃশংস আক্রমণ চালায় ও গ্রেফতার করে।


তার প্রতিবাদে এক ঘণ্টার নোটিশে প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি ওলা,উবের চালক কমরেড রা এসে উপস্থিত হন,3নং পার্কিং এ।তারা স্পষ্ট ভাষায় দাবী জানান, কমরেড মনু সহ আরো চারজন কমরেডের নিঃশর্ত মুক্তি ও দোষী  পুলিশ দের শাস্তি চাই।এই দাবিতে শুরু হয় মিছিল। শ্রমিকদের প্রতিবাদী মিছিলের গর্জনে কেঁপে ওঠে ওই চত্বর। মিছিলের প্রতিবাদী মেজাজ দেখে কমরেড মনু সহ বাকি চার জনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।শুধুমাত্র কমরেডেদের মুক্তি নয় সংগঠনের দাবী মেনে যেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল সেখানে নিয়ে এসে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয় পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া এই জঘন্য কাজের সঙ্গে যুক্ত পুলিশ কর্মীদের শাস্তি দেওয়া হবে।    এই প্রসঙ্গে ওলা উবের চালক সংগঠনের অন্যতম সংগঠক কমরেড ইন্দ্রজিত ঘোষ জানান ,”আমরা বলেছি কাল পরশু খোঁজ নিয়ে দেখবো কি শাস্তি হলো।না হলে আজ যেমন হাওড়া ব্রিজ সহ গোটা স্টেশন যেমন থমকে গেল পরের দিন ঘণ্টার পর ঘন্টা তাই হবে”।     এই রাজ্যের পুলিশের একাংশ বহুদিন যাবত ই পরিনত হয়েছে শাসকের দলদাসে তারা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে।বাগুইহাটির স্কুল পড়ুয়াদের অপহরণ এবং হত্যা পুলিশের ব্যর্থতার চরম নিদর্শন। কিন্ত শাসকের দলদাস এ পরিনত হওয়া পুলিশ শাসকের থেকে তোলাবাজি চালানোর শিক্ষাটা বেশ ভালোই রপ্ত করেছে।       

সংগ্রামী অভিনন্দন জানাই সিটুর নেতৃত্বাধীন ওলা ,উবের অ্যাপ ক্যাবের কমরেডদের। তারা প্রমাণ করলেন যে রাষ্ট্রের  লেঠেল পুলিশের জুলুমের বিরুদ্ধেও লড়া যায় এবং লড়ে জেতা যায়।হয়তো এই লড়াই এই জেতার ঘটনার ব্যাপ্তি একটা ছোট অঞ্চল জুড়ে কিন্ত লড়াইয়ের কোন সাফল্য ই যে ছোট নয় ।কেননা একটি স্ফুলিঙ্গ ই দাবানলের সৃষ্টি করতে যথেষ্ট।