টাইটানিক জাহাজ ডুবেছিল একটা ছোট্ট হিমশৈলের চূড়ার আগাতে, কিন্তু জানা যায় সেই হিমশৈলের যতটা অংশ ওপরে ছিল তার তিনগুন অংশ জলের গভীরে ছিল। এই যে এসএসসি দুর্নীতি আমরা দেখতে পাচ্ছি এটা শুধু মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে কিংবা ২২০ জনের বিষয় নয়। এটা শুধু হিমশৈলের চূড়া মাত্র, এর গভীরে আরও দুর্নীতি আছে। আমরা বলছি বিজেপির ব্যাপম কেলেঙ্কারির চেয়েও আরও বড় কেলেঙ্কারি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের এসএসসি, টেট কেলেঙ্কারি। কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে ক্রমশ কেউটে বের হবে। আজকে পরেশ অধিকারীর নাম বের হয়েছে, পার্থ চ্যাটার্জীর নাম বের হয়েছে কিছুদিন পরে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর নম্বর আছে, তার ভাইপোরও নম্বর আছে। লোকে বলে কান টানলে মাথা আসে, আমরা বলছি মাথাকে টানুন গোটা বড়ি চলে আসবে। মাথাটা কালীঘাটের টালির চালে বসে আছে। বেকার যুবদের গরীব মানুষদের কাছ থেকে তৃণমূলের নেতারা লাখ, লাখ কোটি কোটি টাকা নিয়ে দুর্নীতি করেছে এসএসএসির চাকরি দেওয়ার নাম করে। পরীক্ষা দেয়নি সাদা খাতা জমা দিয়েছে। বোর্ডে নাম নেই তারা চাকরি পেয়েছে। আমরা বলছি না, আদালতের হলফনামাতে অডিও রেকর্ডিং প্রকাশিত হয়েছে। রেকর্ড অডিওতে বলা হচ্ছে পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন নেই ২০ লাখ টাকা দিলেই চাকরি হয়ে যাবে। এসব আসলে কি সততার প্রতীক? আসলে মমতা ব্যানার্জী দুর্নীতির প্রতীক। পশ্চিমবঙ্গের বেকার ছাত্র যুবরা, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বুঝছে আসতে আসতে তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে । দুর্নীতির বিরুদ্ধে এসএফআই- ডিওয়াইএফআই আরও পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে আরও তীব্রতর আন্দোলনের তৈরি।


বামফ্রন্টের আমলে টানা ৩৪ বছরে কোনো শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে একটাও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। সেই জায়গায় তৃণমূলের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জীর এতটাই দুর্নীতগ্রস্ত যে তার পোষ্যের নামেও ফ্ল্যাট রয়েছে। অবশ্য একজন চোরের সঙ্গে একজন ভদ্র শিক্ষিত সৎ মানুষের তুলনা করা যায় না। একজন দাগী চোর যাকে টিভির পর্দায় ঘুষ নিতে দেখা যায় তাদের যদি একজন একজন ভদ্র শিক্ষিত সৎ মানুষের যদি তুলনা করা হয় তাহলে সেই তুলনা সম্পূর্ণ বেকার। তৃণমূলের টপ টু বোটম সবাই চোর। সম্রাট শাহাজান তাঁর প্রিয় স্ত্রীয়ের জন্য তাজমহল তৈরি করেছিল, কিন্তু পার্থ চ্যাটার্জী তাঁর মৃত স্ত্রীয়ের নামে পিংলাতে প্রাইভেট স্কুল তৈরি করেছেন। পার্থ চ্যাটার্জীর পোষ্যের নামেও একাধিক ফ্ল্যাট, জমি, জায়গা রয়েছে। শুধু মাত্র পার্থ চ্যাটার্জী না, কালীঘাটের টালির বাড়িতে যিনি থাকেন ওনার নামে, ওনার পরিবারের সদস্যদের নামেও কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বহু জায়গায় বাড়ি, প্লট আছে। গোটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সবটাই জানে, কিছু মানুষকে কিছুদিনের জন্য ভুল বুঝিয়ে রাখা যায়, কিন্ত সবসময় সব মানুষকে ভুল বুঝিয়ে রাখা যায়না।

আমার ধারণা আমরা প্রায় সবাই ছোটবেলা থেকে ট্ম এন্ড জেরি দেখে বড় হয়েছি। টম এন্ড জেরি যতই ঝগড়া করুক, যতই মারামারি করুক। টম কিংবা জেরি যখন বিপদে পড়ে অন্য একজন তাকে বাঁচাতে ঠিক চলে আসে। এই সিবিআই আর তৃণমূলের খেলা টা ঠিক টম এন্ড জেরির মতো। কিছুদিন হয়তো ঝগড়া করে এন্টারটেনমেন্ট করবে কিন্তু কেউ বিপদে পড়লে ঠিক বাঁচাতে চলে আসবে। পশ্চিমবঙ্গে গত ১০ বছরের ইতিহাস মাননীয়া দিল্লিতে যান, গিয়ে সৌজন্য মূলক সাক্ষাৎ করেন হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে, নয়তো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারপর তিনি ফিরে আসেন। কিছুদিন পর বিজেপির কোনো নেতা পশ্চিমবঙ্গের সফরে আসেন, কারোর বাড়িতে পাত পেড়ে খেতে যান। কখনও কোনো আধিবাসী, কখনও কোনো গরীব মানুষ, কখনও সেলিব্রিটির বাড়িতে পাত পেড়ে খেয়ে যান। তারপরেই সিবিআইয়ের আনাগোনা বেড়ে যায়।

ভুলে গেলে চলবে না, অভিষেক ব্যানার্জীর বালি, কয়লা, এবং গরু পাচারে নাম উঠেছিল। ভাইপোর বউকে নাকি সোনা পাচারে সিবিআই ডেকে ছিল। কোথায় গেল রিপোর্ট? ফলে শুধুমাত্র এই সিবিআইয়ের রিপোর্টে ভরসা করলে চলবে না। সিবিআই হচ্ছে টম এন্ড জেরির মতো খেলা, যে খেলা পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে এন্টারটেনমেন্ট করছে। মানুষকে একটু ভুল পথে আনার চেষ্টা চলছে, বিজেপি ভাবছে দেখ আমরা ক্ষমতায় আছি তাই সিবিআই দিয়ে তৃণমূল কে জব্দ করছি। আসলে এই খেলা বেশিদিন খেললে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ধরে ফেলবে, ফলে বিজেপি আর তৃণমূলের খেলা আসতে আসতে ওপেন হয়ে যাচ্ছে । মানুষ সবই বুঝতে পারছে। এই সিবিআই নাটক আর কতদিন চলবে। যদি পুলিশ মনে করবে তাহলে মন্দির, মসজিদের বাইরে থেকে কোনো জুতো চুরি যায়না। সিবিআই একটা সামান্য চিঁটকে চোর অনুব্রত মন্ডলকে গ্রেফতার করতে পারছেনা। পিসির ভাইপো যে কয়লা চুরি করছে, কয়লা পাচার করছে তাকে ধরতে পারছেনা। পশ্চিম বর্ধমানে যান, সাধারণ লোককে জিজ্ঞেস করবেন কয়লা পাচার হয় এখানে কোন নেতার জড়িত আছে। সাধারণ লোককে জিজ্ঞেস করবেন একদম চোখ বন্ধ করে বলবে অভিষেক ব্যানার্জী জড়িত আছে। পশ্চিমবঙ্গের লোকজন দেখছে সবাই জানে কিন্তু সিবিআই জানে না। বীরভূমে যেখানে বালি পাওয়া যায় সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন বালি পাচারে কে যুক্ত , লোকে অনুব্রত মন্ডলের নাম বলবে। এটাও সবাই জানে কিন্তু সিবিআই জানে না। জানার পরেও কিছু করছেনা আসলে এসব সেটিং । সেটিংয়ের পরেও একটু নাটক হচ্ছে, আসলে কিছু রফা আছে সেই রফাটা আসতে আসতে বোঝা যাবে।

আমরা প্রথমদিন থেকে বলেছি আমরা আদালতের লড়াইও লড়তে রাজি আছি, রাস্তার লড়াইও লড়তে রাজি আছি। আদালতে যেমন লড়াই করছি, মানুষ জানে বামপন্থী আইনজীবিদের লড়াইয়ের ফলে আজকে এই কেস ওপেন হয়েছে। বামপন্থী আইনজীবীরা কোর্টের অভ্যন্তরে লড়াই লড়ছেন, আমরা বামপন্থী ছাত্র যুবরা SFI- DYFI পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থী ছাত্রযুবরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করছি । আমরা বলছি সবে শুরু হয়েছে। আমরা বলছি এসব সবে শুরু হয়েছে পুরো ট্রেলার এখনও বাকি আছে। এখনও উনুনে হাঁড়ি চাপানো হয়নি, হাঁড়িতে জল দেওয়া হয়নি। উনুনে আগুন লাগানো হবে, হাঁড়ি চাপানো হবে, জল দেওয়া হবে, তারপর জল পুঠবে সেই জল ফুটে বাষ্প হবে এখনও অনেক কাহিনী বাকি আছে। গোটা তৃণমূল দলটা পশ্চিমবঙ্গের মাটি থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, বিজেপিকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে । তৃণমূলের ছোট, মেজ, মাঝারি, বড় সব নেতারা যারা প্রসাস প্রমদ বাড়ি করে বসে আছে তাদের সবার ঠিকানা জেল খানা। তাদের জেলখানাতে ভরার দায়িত্ব বামপন্থী ছাত্রযুবরা নেবে। প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে নেবে, দরকার পড়লে আদালতে দ্বারস্থ হবো।