কমিউনিস্ট মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা কার্ল মার্কসের জীবনাবসানের পর তাঁর সহ প্রতিষ্ঠাতা, অভিন্নহৃদয় বন্ধু ও শ্রমিক শ্রেণির অপর মহান শিক্ষক ফ্রেডরিক এঙ্গেলস বলেছিলেন, “মানব সমাজ থেকে একটা মস্তিষ্ক কমে গেল, আমাদের সমকালের শ্রেষ্ঠ মস্তিষ্ক।” মার্কস বলেছেন, “দার্শনিকরা বিভিন্নভাবে কেবলমাত্র বিশ্বের ব্যাখ্যাই দিয়ে এসেছেন, কিন্তু আসল কাজ হল একে পরিবর্তন করতে হবে।”  এই প্রসঙ্গে বলা যায়, বিশ্বকে বদলে দিতে তাঁর শিক্ষার মতো অন্য কোনো দার্শনিকের শিক্ষাই এতটা কার্যকরী হয় নি। পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে মানুষকে কেন সংগ্রাম করতে হবে তা আর কেউই এতটা স্পষ্টভাবে দেখাতে পারেন নি।

      লেনিন বলেছেন, “মার্কসবাদ সর্বশক্তিমান কারণ এটা সত্য।” পুঁজিপতিদের ও পুঁজিবাদী তাত্ত্বিকদের বিরুদ্ধতার মধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে এই মতবাদের বিশ্বজোড়া ব্যাপ্তি ও শক্তিময়তা। ১৯১৩ সালে লেনিন লিখেছিলেন যে, সমস্ত সভ্য সমাজে মার্কসের শিক্ষা প্রচণ্ড প্রতিকূলতা সৃষ্টি করেছে। সমস্ত  বুর্জোয়া সমাজবিজ্ঞানই মার্কসবাদকে  ধ্বংসাত্মক সম্প্রদায়ের মতবাদ হিসেবে ঘৃণা করে। অবশ্য ভিন্ন কোনো কিছু প্রত্যাশিতও নয়। কারণ শ্রেণিসংগ্রামের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা সমাজে ‘নিরপেক্ষ’ কোনো সমাজবিজ্ঞান থাকতে পারে না। কোনো না কোনোভাবে বুর্জোয়া সমাজবিজ্ঞান  মজুরি-দাসত্বকেই সমর্থন করে। মার্কসবাদ এই দাসত্বের বিরুদ্ধেই অবিরাম সংগ্রামের ডাক দিয়েছে। মজুরি-দাসের সমাজে সমাজবিজ্ঞান নিরপেক্ষ হবে, এটা প্রত্যাশা করা যেমন হাস্যকর বোকামি তেমনই শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর প্রশ্নে তাদের মুনাফা কমিয়ে পুঁজিপতিরা দরদি অবস্থান গ্রহণ করবে এই প্রত্যাশাও হাস্যকর।

         মার্কসবাদ শ্রমিক শ্রেণির মতবাদ। মার্কস ও এঙ্গেলস রচিত কমিউনিস্ট পার্টির ইস্তেহারে বলা হয়েছে শ্রেণি বিভক্ত সকল সমাজের ইতিহাস হল শ্রেণিসংগ্রামের ইতিহাস। সমাজে উদ্বৃত্ত সৃষ্টির পরেই এল শ্রেণিভেদ। উৎপাদনের উপায়সমূহ ও উপকরণের মালিকানাকে ঘিরেই সৃষ্টি হয়েছে শ্রেণিভেদ। শ্রেণিভেদের সঙ্গেই সূচনা হল শ্রেণিসংগ্রামের ও উদ্ভব হল রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র প্রভূত্বকারী শ্রেণি অর্থাৎ উৎপাদনের উপকরণের মালিকানা যে শ্রেণির হাতে, সেই শ্রেণির দ্বারা মালিকানাহীন মেহনতকারী শ্রেণিকে শোষণ ও শাসনের যন্ত্র। মার্কসীয় সমাজবিকাশের ইতিহাস  থেকে আমরা জানতে পারি যে,প্রথম শ্রেণিসমাজ দাস সমাজে ক্রীতদাসত্বের বিরুদ্ধে শ্রেণিসংগ্রাম চলেছিল দাস মালিক ও ক্রীতদাসদের মধ্যে, সামন্ত সমাজে ভূমিদাসত্বের বিরুদ্ধে সামন্ত প্রভূ ও ভূমিদাস তথা কৃষকদের মধ্যে এবং পুঁজিবাদী সমাজে মজুরিদাসত্বের বিরুদ্ধে পুঁজিপতি বা বুর্জোয়া  শ্রেণি ও প্রলেতারিয়েত তথা মজুর বা শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে শ্রেণি সংগ্রাম জারি রয়েছে। মার্কস  তাঁর ‘প্রিফেস টু এ কনট্রিবিউশন টু দি ক্রিটিক অব পলিটিক্যাল ইকনমি’তে লিখেছেন, ‘আমি নিম্নোক্ত ক্রমানুসারে বুর্জোয়া অর্থনীতিকে বিশ্লেষণ করেছি : পুঁজি, ভূমি-সম্পত্তি, মজুরি-দাস, রাষ্ট্র,  বৈদেশিক বাণিজ্য, বিশ্ব-বাজার।প্রথম তিনটি শিরোনামে আমি আধুনিক বুর্জোয়া সমাজ যে তিনটি মূল শ্রেণিতে বিভক্ত তাদের জীবনের আর্থিক অবস্থার তদন্ত করেছি—।’ মজুরি দাসত্বের ব্যবস্থায় শ্রমিকের শ্রমশক্তি সৃষ্ট উদ্বৃত্ত মূল্য শোষণ করে মুনাফা বাড়ায় বুর্জোয়ারা। তাই পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় মজুরিদাসত্বের বিরুদ্ধে অবিরাম সংগ্রামের ডাক দিয়েছে মার্কসবাদ। এই সংগ্রামের অন্তর্ভুক্ত বর্তমান সময়ের মেধাজীবীরাও (আই টি ওয়ার্কার, প্রযুক্তিবিদ প্রমুখ)। কারণ শ্রমিকের শ্রমশক্তির মতোই তারাও মেধাশক্তি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে পুঁজির মালিকদের কাছে এবং উদ্বৃত্ত মূল্যও সৃষ্টি করছে ও শোষিত হচ্ছে।

         লেনিনের ভাষ্য অনুযায়ী ঊনবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে উন্নতশীল তিনটি দেশের তিনটি মূল আদর্শগত ধারাকে ভিত্তি করে মার্কসবাদের তত্ত্বগত বিকাশ ঘটিয়েছেন মার্কস ও এঙ্গেলস। সেই তিনটি ধারা হল চিরায়ত জার্মান দর্শন, ইংল্যান্ডের চিরায়ত রাজনৈতিক অর্থনীতি ও ফরাসি সমাজতন্ত্রবাদ যা সাধারণভাবে ফরাসিদের  বিপ্লবের তত্ত্বের  মিশেলে তৈরি মতবাদ। জার্মান দার্শনিক হেগেলের দ্বন্দ্বতত্ত্বের সাথে ফয়েরবাখের বস্তুবাদের ধারণার মিশ্রণে রচিত দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদী দর্শনের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত মতবাদ হল মার্কসবাদ। মার্কস ও এঙ্গেলস হেগেলের দ্বন্দ্বতত্ত্বকে চিরায়ত জার্মান দর্শনের বিরাট সাফল্য বলে মনে করতেন। কারণ তা বিকাশের এক ব্যাপক ধারণা দান করেছিল। তাই এর ভাববাদী ভাবনাকে পরিহার করে একে বস্তুবাদী ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে মার্কস ও এঙ্গেলস একে বিপ্লবী তত্ত্বে পরিবর্তিত করেন।

        মার্কসবাদ আমাদের শেখায় শ্রম ও শ্রমশক্তির পার্থক্য। সারা দুনিয়ার অর্থনীতির ছাত্ররা উদ্বৃত্ত মূল্যের তত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা পায় মার্কসীয় অর্থনীতি থেকে। মূল্য ঘনীভূত শ্রম ছাড়া কিছুই নয়। সব শ্রম মূল্য সৃষ্টি করে না। উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত শ্রমশক্তিই মূল্য তৈরিতে সক্ষম।  পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে প্রতিনিয়ত উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত বিপুল পরিমাণ শ্রমশক্তি থেকে তৈরি বিপুল পরিমাণ মূল্যের বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত আত্মসাৎ করে পুঁজিপতিরা তাদের মুনাফার পাহাড় বানায়। এইখানেই পুঁজিবাদের শোষণের রহস্য লুকিয়ে আছে। মার্কস এই শোষণকে উন্মোচিত করেছেন তাঁর উদ্বৃত্ত মূল্যের তত্ত্বে।

      পুঁজির দ্বারা শ্রমশক্তির মূল্যের এই শোষণের ব্যবস্থা অর্থাৎ পুঁজিবাদী ব্যবস্থার উচ্ছেদের জন্যই প্রয়োজন সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণির রাষ্ট্র গঠন। আর সেক্ষেত্রে বুর্জোয়া শ্রেণিকে রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে অপসারণ করাই যথেষ্ট কাজ নয়, বুর্জোয়া রাষ্ট্রযন্ত্রটিকে চূর্ণবিচূর্ণ করাই বিপ্লবী শ্রেণির কাজ। এটাই  মার্কসের শিক্ষা। আমাদের দেশের মতো যে সমস্ত দেশে গণতান্ত্রিক বিপ্লব অসম্পূর্ণ  সেই সমস্ত দেশে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বিপ্লব সমাধা করে সমাজতন্ত্রের পথে এগনোর কথা বললেন লেনিন। লেনিনীয় সেই বিপ্লবী দিকনির্দেশ অনুযায়ী অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া, কৃষিনির্ভর রাশিয়ায় ১৯১৭ সালের মার্চ মাসে গণতান্ত্রিক বিপ্লব ও নভেম্বর মাসে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন হবার মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণির রাষ্ট্র তথা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠিত হয়।আমাদের দেশের সমাজ বাস্তবতায় গণতান্ত্রিক বিপ্লব অসম্পূর্ণ থাকার কারণেই জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের মধ্য দিয়েই সমাজতন্ত্রের পথে এগনোর কথা বলা হয়েছে সি পি আই এম-এর পার্টি কর্মসূচিতে ।

          শ্রমিকশ্রেণির রাষ্ট্র কীভাবে ক্ষুদ্র চাষির ও ছোটো খণ্ড খণ্ড জমির সমস্যা যা দক্ষ ও ফলপ্রসূ উৎপাদনকে ব্যাহত করে থাকে, তার সমাধান করবে? এঙ্গেলস এই প্রসঙ্গে তাঁর ‘দি পেজান্ট কোশ্চেন ইন ফ্রান্স এন্ড জার্মানি’ নিবন্ধে লিখেছেন, ‘—যখন আমরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী হব তখন আমরা ক্ষুদ্র চাষিকে (ক্ষতিপূরণ দেওয়া অথবা না দেওয়ার প্রশ্ন অবান্তর) বলপূর্বক দখলচ্যুত করার চিন্তাও করব না, যা আমাদের বড়ো জোতদারদের ক্ষেত্রে করতে হবে। ক্ষুদ্র চাষির পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দায়িত্ব হল, প্রথমতঃ তার ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও সম্পদকে সমবায়ে রূপান্তরিত করা, বলপূর্বক নয়, উপযুক্ত উদাহরণ ও এই উদ্দেশ্যে সামাজিক সাহায্য প্রদান করে।’ এই পথ রাশিয়ার বলশেভিক পার্টি এবং পরবর্তী সময়ে অন্যান্য  পার্টিগুলি অনুসরণ করেছিল।

          কার্ল মার্কস পুঁজি সম্পর্কে ব্যাখ্যায় দেখিয়েছেন যে, পুঁজির চরিত্র আন্তর্জাতিক। তাই তিনি শ্রমিক শ্রেণির আন্তর্জাতিক চেতনা গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছিলেন। কমিউনিস্ট ইস্তেহারের শ্লোগানও ছিল ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’। পরবর্তী সময়ে এঙ্গেলসের নেতৃত্বে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের সিদ্ধান্তক্রমে মে-দিবসকেও আন্তর্জাতিক চেহারা দেওয়া হয়।

          মার্কসবাদের প্রণেতাগণ কার্ল মার্কস ও ফ্রেডরিক এঙ্গেলস   বলেছিলেন যে, তাঁদের মতাদর্শ কোনো আপ্তবাক্য নয়, কর্মক্ষেত্রে পথনির্দেশক। সেই ভাবনা অনুযায়ী তাঁরা নিজেরা একইসঙ্গে ছিলেন বিপ্লবী চিন্তার নায়ক ও সংগঠক। সমকালের শ্রমিক আন্দোলনে তাঁরা সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৬৪ সালে গড়ে তুলেছিলেন শ্রমজীবী মানুষের আন্তর্জাতিক সংগঠন-‘প্রথম আন্তর্জাতিক’।

         শ্রমিক শ্রেণির নিজস্ব রাজনৈতিক পার্টি অর্থাৎ কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রথম আন্তর্জাতিকের লন্ডন কংগ্রেস (১৮৪৩) ও হেগ কংগ্রেসে (১৮৭২) প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। যত দিন গেছে বিশ্বের দেশে দেশে কমিউনিস্ট পার্টির বিস্তার ঘটেছে একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শকে ভিত্তি করে। সেই মতাদর্শ হল মার্কসবাদ।

         আজকের দুনিয়ায় মার্কস বর্ণিত পুঁজির রূপ অনেক পাল্টে গেছে। মার্কস পুঁজি প্রসঙ্গে ব্যাখ্যায় পুঁজির পুঞ্জীভবন (Concentration), কেন্দ্রীভবন (Centralisation) তথা একচেটিয়া রূপ পরিগ্রহের কথা বলেছিলেন।  সেটি ছিল পুঁজির প্রথম প্রজন্ম। লেনিন বললেন লগ্নিপুঁজির কথা। একটি দেশের শিল্পপুঁজি ও ব্যাঙ্কপুঁজির মিলনে সৃষ্ট হয় লগ্নিপুঁজি। মুনাফার জন্য সীমাহীন লালসার কারণেই  লগ্নিপুঁজির রূপ নিতে হল মার্কস কথিত পুঁজিকে। লেনিনের যুগে লগ্নিপুঁজির চরিত্র ছিল দেশীয়, বাজার দখলের স্বার্থে তাই সেই সময় ঘটত দেশে দেশে যুদ্ধ—সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ। পুঁজিবাদ তার উচ্চতম স্তরে মুনাফা ও বাজারের লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদের স্তরে রূপান্তরিত হয়। এ হল পুঁজির দ্বিতীয় প্রজন্মের রূপ।

বর্তমানে  এই লগ্নিপুঁজি বিপুল ও বৃহদায়তন আকার নিয়েছে। তার চরিত্র হয়েছে আন্তর্জাতিক। এখন আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব অনেকাংশেই স্তিমিত। বিপুল লগ্নিপুঁজির মালিক মাল্টিন্যাশনাল, ট্রান্সন্যাশনাল কোম্পানিগুলি তথা বিশ্ব পুঁজিবাদী শিবির  সম্মিলিতভাবে বিশ্বকে অর্থাৎ বিশ্বের বাজারকে কব্জা করার চেষ্টায় মত্ত। আগ্রাসী চেহারার  লগ্নিপুঁজির বিনিয়োগ কেবলমাত্র শিল্পে সীমাবদ্ধ নয়, বিনিয়োগের কেন্দ্রীয় নজর শেয়ার বাজারে—ফাটকায়। আন্তর্জাতিক লগ্নিপুঁজি ক্রমশ আন্তর্জাতিক ফাটকা পুঁজির রূপ পরিগ্রহ করছে। উপরোক্ত উদ্দেশ্য সিদ্ধির লক্ষ্যেই অর্থাৎ বিশ্বের বাজারের ওপর, বিনিয়োগ ক্ষেত্রের ওপর একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আজকের পুঁজিবাদ সক্রিয়। এ হল পুঁজির তৃতীয় প্রজন্মের রূপ। কিন্তু এতদসত্ত্বেও পুঁজিবাদ সংকট থেকে বেরোতে পারছে না। বেকারি, মূল্যবৃদ্ধি, ছাঁটাই, বেতন হ্রাস সহ নানাবিধ সংকটের বোঝা আজ নেমে এসেছে শ্রমিক শ্রেণি ও অন্যান্য অংশের শ্রমজীবী মানুষের ঘাড়ে। তাই পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে, নয়া আর্থিক উদারনীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামও তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এর পাশাপাশি পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মধ্যেই বিকল্প পথ অনুসরণ করে নয়া উদারনীতি তথা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের একাধিপত্যকে নস্যাৎ করার প্রয়াস জারি রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে। রাশিয়া, চিন ও আরো কিছু দেশ পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে নিজস্ব অর্থনৈতিক বিকাশের পথে এগিয়ে চলেছে। বিশেষ করে সমাজতান্ত্রিক চিনের আর্থিক অগ্রগতির চেহারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কাছে বিশাল চ্যালেঞ্জ হাজির করেছে। এই যাবতীয় ঘটনাই শ্রেণিসংগ্রামের তীব্রতা বৃদ্ধি ও মার্কসবাদের অভ্রান্ততা প্রমাণ করছে।

            কমিউনিষ্ট ইস্তেহারের সেই অমোঘ ঘোষণা উদ্ধৃত করে এই নিবন্ধের ইতি টানছি—”শৃংখল ছাড়া প্রলেতারিয়েতের হারাবার কিছু নেই, জয় করার জন্য আছে সারা দুনিয়া।”